আমের ৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

আম একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। বাংলাদেশের এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে আম হয় না। তবে ভালো মানের আমের জন্য বিখ্যাত রাজশাহী অঞ্চল। আম স্বাস্থের জন্য খুবই উপকারী। তবে মনে রাখবেন অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। আম হৃ’দ’রো’গ ও চোখের স্বাস্থ্যের খুবই উপকারী। এছাড়াও নানাবিধি রোগের ক্ষেত্রে আমের উপকারিতা পাওয়া যায়। চলুন তাহলে আজ জেনে নিই আমের ৬ টি স্বাস্থকারী উপকারিতা সম্পর্কে-

১. আম ক্যারোটিনয়েডের একটি দুর্দান্ত উৎস, যা হলুদ ফলকে রঙ দেয়। ক্যারোটিনয়েডযুক্ত খাবার খাওয়ার একটি সুবিধা হলো- এগুলো সঠিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কার্যকারিতা বাড়ায়। এই যৌগগুলোতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যও রয়েছে।

২. আম খেলে রক্তে লিপিডের (যেমন, কোলেস্টেরল) মাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো হতে পারে। আমে ম্যাঙ্গিফেরিন নামে একটি নির্দিষ্ট পলিফেনল থাকে, যা উদ্ভিদ ও প্রাকৃতিক ওষুধে পাওয়া যায়। ম্যাঙ্গিফেরিন গ্রহণ লিপিডের মাত্রা ও প্রদাহের মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

৩. ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি-এর পাশাপাশি বিটা-ক্যারোটিনও রয়েছে – একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করে। এছাড়াও আমে পাওয়া ক্যারোটিনয়েড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লুটেইন ও জেক্সানথিন মানুষের চোখকে নানা উপায়ে সাহায্য করে। দুটি প্রাকৃতিক যৌগ, যা রেটিনা এবং লেন্সকে রক্ষা করে।

৪. ফাইবারের পরিমাণের কারণে হজমে সহায়তা করার জন্য আম ভালো কাজ করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা চার সপ্তাহ ধরে ৩’শ গ্রাম আম (অথবা এক থেকে দুটি আম) খেয়েছেন তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের অভিজ্ঞতার উন্নতি হয়েছে।

৫. আমে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি থাকে। কোলাজেন তৈরির জন্য এই পুষ্টি উপাদান দরকার, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা দেয়, বলিরেখা ও ঝুলে পড়া রোধ করতে সাহায্য করে। আম গাছের অন্যান্য অংশও ত্বকের জন্য উপকারী হতে পারে। গবেষকরা জানিয়েছেন যে, আমের পাতা থেকে পাওয়া ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা নির্যাস স্বেচ্ছাসেবকদের একটি ছোট দলের ব্রণ কমাতে সাহায্য করেছে।

৬. আমে প্রচুর পরিমাণে পলিফেনল থাকে, যা খোসা, পাল্প ও বীজের মধ্যে পাওয়া যায়। এই উদ্ভিদ যৌগগুলোতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্যকলাপ রয়েছে যা কোষকে ডিএনএ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে যা টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও ক্যা*ন্সা’র-সহ অবক্ষয়জনিত রোগের কারণ।

আসলে আমের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। তবে অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে খাবেন। আর যাদের শরীরে ডায়াবেটিস আছে তারা পাকা (মিষ্টি) আম এড়িয়ে চলবেন। আমে প্রচুর পরিমাণ সুগার আছে যা রক্তে সুগার বাড়িয়ে দেয়। তবে টক আম খেতে পারেন।

সৌদি আরবের ৫ টি সেরা দর্শণীয় স্থান

সৌদি আরব বহুকাল যাবত বহির্বিশ্ব থেকে একরকম অন্তরালেই ছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে দেশটি পালটে যাচ্ছে। দেশটি এক সময় একেবারে রক্ষণশীল ছিল। কিন্তু দিন দিন সেখান থেকে বেরিয়ে আসছে দেশটি। এখন আর সেখানে হিজাব বা ঐতিহ্যবাহী লম্বা পোশাক বাধ্যতামূলক নয়। নারীরা স্টিয়ারিং হুইলে, পাহাড়ে, অফিসে—সব জায়গায় নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছেন। ভিশন-২০৩০ এর আলোকে উপসাগরীয় এই দেশটির সরকার পর্যটনকে সামনে রেখে খুলে দিচ্ছে নতুন দিগন্ত। যেখানে আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন ভ্রমণকারীদের জন্য হাতছানি দিচ্ছে। আজ আমরা সৌদি আরবে সেরা ৫টি দর্শণীয় স্থান নিয়ে আলোচনা করব-

১. রিয়াদ: মরুভূমির রাজকীয় উজ্জ্বলতা

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ এখন এক মহা নির্মাণযজ্ঞের শহর। বিলাসবহুল হোটেল, ফাইভ-স্টার ব্র্যান্ড ও উচ্চাভিলাষী মেট্রো রেল প্রকল্প দিয়ে শহরটি যেন ভবিষ্যতের ক্যানভাস হয়ে যাচ্ছে। তবে প্রযুক্তির ঝলক ছাপিয়ে চোখে পড়ে আত-তুরাইফের মাটির ইটের দুর্গ। যা আল-সৌদ রাজবংশের সূতিকাগার। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐত্যিহ্যের স্বীকৃতিতে স্থানটি এখন নতুন আলো ও আধুনিক জাদুঘরের ছোঁয়ায় পুনর্জীবিত।

২. তাবুক: ভবিষ্যতের গেটে দাঁড়িয়ে

উত্তরের শহর তাবুক—একসময় নিঃসঙ্গ মরুভূমি ছিল। এখন এটি “দ্য লাইন” প্রকল্পের সূচনাস্থল। এখানে গড়ে উঠছে ১৭০ কিমি দীর্ঘ, কার্বন-মুক্ত এক বিস্ময়কর শহর। নিকটবর্তী ট্রোজেনা প্রকল্পে কৃত্রিম হ্রদ আর বরফঢাকা স্কি রিসোর্ট গড়ে তোলা হচ্ছে, মরুভূমির বুকে যা শুনলে আজও অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে—এ কি স্বপ্ন, না বাস্তব?

৩. আল উলা: মরূদ্যানের রহস্যঘেরা সৌন্দর্য

আল উলা হলো সৌদি আরবে পর্যটনের মুকুটমণি। পৃথিবীর বৃহত্তম আয়নাযুক্ত ভবন মারায়া এখানে অবস্থিত। যা এক শিল্প ও সঙ্গীতের আধুনিক কেন্দ্র। চারদিকে দারুণ পাহাড়, পাথরের হাতি আকৃতির শিলা ও প্রাচীন হেগরা নগরীর ধ্বংসাবশেষ এই অঞ্চলকে ইতিহাস ও রোমাঞ্চের মিলনস্থলে পরিণত করেছে। রাতে খোলা আকাশের নিচে খাবারের ট্রাক, সংগীত ও বরফ-ঠাণ্ডা পানীয়—সব মিলিয়ে যেন এক মরুদ্যান ফেস্টিভ্যাল।

৪. হেগরা: ইতিহাসের সোনালী ছায়া

পেত্রার যমজ শহর হেগরা। যেটি সৌদি আরবের প্রথম ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। এটি এখন বিশ্ব পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত। প্রতিটি শিলা ও খোদাই যেন একেকটি জীবন্ত গল্প বলে যাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি ও সংরক্ষণশীলতার সংমিশ্রণে এই শহরটি ইতিহাসে ফিরেছে নতুন প্রাণ নিয়ে।

৫. মদিনা: আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যের নীরব প্রতিচ্ছবি

ইসলাম ধ’র্মে’র দ্বিতীয় পবিত্রতম শহর মদিনা এখন অমুসলিমদের জন্যও আংশিকভাবে উন্মুক্ত। যদিও মসজিদে নববীতে প্রবেশের অনুমতি নেই। তবে পুলম্যান জমজম হোটেলের উচ্চতলা থেকে সেই দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষের শান্ত পদচারণায় পুরো শহর যেন আধ্যাত্মিকতায় মোড়া এক মহাকাব্যের দৃশ্য।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব কেবল এক রহস্যময় মরুভূমি নয়। বরং এক পরিবর্তনশীল রূপকথার রাজ্য। আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের অপূর্ব সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই দেশটি এখন বিশ্ব পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত, অভ্যর্থনামূলক ও চমকে দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতায় ভরপুর। এখন আপনিও বেরিয়ে পড়তে পারেন সৌদি দেখার আকুলতা নিয়ে।

দুবাইয়ের ৫ টি আকর্ষণীয় স্থান

দুবাই বিশ্বের একটি অন্যতম শহর। এটিকে অবশ্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্য নগরীও বলা হয়। যেখানে বিলাসিতা, আধুনিকতা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একত্রে মিশে গেছে। গগনচুম্বী অট্টালিকা, স্বর্ণালি মরুভূমি, বিলাসবহুল হোটেল, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও চমকপ্রদ অভিজ্ঞতার জন্য দুবাই আজ বিশ্ব ভ্রমণকারীদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। চলুন তাহলে আজ জেনে নিই, দুবাই ভ্রমণে যে ৫ টি স্থান আপনাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেবে সে সম্পর্কে-

১। বুর্জ খলিফা ও দুবাই মল: আধুনিক শহরের হৃদস্পন্দন

পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফা শুধু স্থাপত্যের নিদর্শন নয়, এটি দুবাই শহরের মুকুট হিসেবে পরিচিত। ‘অ্যাট দ্য টপ’ পর্যবেক্ষণ ডেকে দাঁড়িয়ে শহরের ৩৬০ ডিগ্রি দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করে দেবে। যেখানে প্রতি বছর কয়েক কোটি ভ্রমণকারী ঘুরতে আসে। বুর্জ খলিফার সঙ্গেই রয়েছে বিশাল দুবাই মল-বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শপিং ও বিনোদন কেন্দ্র। এখানে রয়েছে ইনডোর আইস স্কেটিং রিঙ্ক, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পার্ক, জলজ চিড়িয়াখানা, হিউম্যান ওয়াটারফল ও বইপ্রেমীদের স্বর্গ ‘কিনোকুনিয়া’।

২। দ্য পাম, জুমেইরাহ: বিলাসিতা ও প্রকৃতির সম্মিলন

পাম আকৃতির এই কৃত্রিম দ্বীপটি বিলাসবহুল হোটেল, আন্ডারওয়াটার স্যুট ও চমকপ্রদ রিসোর্টের জন্য বিখ্যাত। এটি দুবাইয়ের আরেকটি বড় আকর্ষণ। ‘দ্য ভিউ অ্যাট দ্য পাম’-এ উঠে সমুদ্র ও আকাশরেখার মিলন উপভোগ করা যায়। আর ‘আটলান্টিস অ্যাকোয়াভেঞ্চার’ পার্কে কাটান দিনভর অ্যাডভেঞ্চার। পাম লেগুনে ৫-তারকা ডাইনিং আর নৌকা ভ্রমণ অভিজ্ঞতা যোগ করবে অতিরিক্ত আনন্দ।

৩। দুবাই মেরিনা: আধুনিক শহরের বিলাসী প্রান্তর

গগণচুম্বী অট্টালিকা, বিলাসবহুল ইয়ট আর জলপথে জ্বলজ্বলে শহর হলো দুবাই মেরিনা। এখান থেকে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী ধাউ ভ্রমণ, এক্সক্লুসিভ ইয়ট ডিনার কিংবা পৃথিবীর দীর্ঘতম শহুরে জিপলাইন এক্স-লাইন এর মতো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। সঙ্গে জেবিআর এর দ্য ওয়াক বোর্ডওয়াক, সমুদ্রতীরবর্তী রেস্তোরাঁ ও ইনফিনিটি পুলে এক ভিন্ন মাত্রার স্বস্তি দেয়।

.৪। হাত্তা ড্যাম: প্রকৃতির কোলে এক শান্তিপূর্ণ পালাবদল

দুবাই শহর থেকে একটু দূরে, পাহাড়ঘেরা হাত্তা হল প্রকৃতিপ্রেমীদের স্বপ্নের এক অন্যতম গন্তব্য। নীলাভ হ্রদ, প্রাচীন দুর্গ, পাহাড়ি ট্রেইল ও অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস-সব মিলিয়ে এখানে রয়েছে নিঃসন্দেহে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। আপনি চাইলেই অংশগ্রহণ করতে পারেন কায়াকিং, মাউন্টেন বাইকিং কিংবা একটি রাত কাটাতে পারেন তারা ভরা গ্ল্যাম্পিং ক্যাম্পে।

৫। মরুভূমি সাফারি: বালুর রাজ্যে এক আরবীয় কল্পনা

দুবাইয়ের আত্মা খুঁজে পাবেন তার বিশাল মরুভূমিতে। টিলা বালিশিং, উটে চড়া, কোয়াড বাইকিং, কিংবা গরম বেলুনে করে সূর্যোদয় উপভোগ-প্রতিটি মুহূর্তে থাকবে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। রাতের বেলায় আরবীয় শিবিরে উপভোগ করুন ঐতিহ্যবাহী নাচ, স্থানীয় খাবার আর ফ্যালকন শো—যা আপনাকে একেবারে সময়ের সীমানা ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে।

আসলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্য নগরী দুবাই শুধু একটি শহর নয়, এটি এক বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতা। আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের মেলবন্ধন, প্রকৃতি আর প্রযুক্তির যুগলবন্দি-সব মিলিয়ে এক অভূতপূর্ব ভ্রমণ স্মৃতি আপনার অপেক্ষায়। তাই আর নয় অপেক্ষা। আজই বেড়িয়ে পড়ুন দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে আর উপভোগ করুন স্বর্গীয় অনুভূতি।

গ্রীষ্ম শুরু হওয়ার আগে আবুধাবি ভ্রমণের সেরা ৫ টি দর্শনীয় স্থান

উপসাগরীয় দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় দরজায় নক দিচ্ছে। স্থানীয় তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আবুধাবির লোনাপানি, সবুজ স্থান ও মরুদ্যানের কারণে, মৌসুমের তাপ পুরোপুরি শুরু হওয়ার ঠিক আগে মুহূর্তে বাইরের পরিবেশ উপভোগ করার সুযোগ এখনো আছে।

দেশটির জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র (এনসিএম) অনুসারে, আবুধাবির বাসিন্দারা সামনে একটি উষ্ণ, সাধারণত পরিষ্কার সপ্তাহ আশা করতে পারেন। আকাশ বেশিরভাগ সময় পরিষ্কার থাকবে। যারা গ্রীষ্মের পূর্ববর্তী আবহাওয়ার সর্বাধিক সুবিধা নিতে চান, তাদের জন্য এখানে কিছু শীর্ষ বহিরঙ্গন স্থান রয়েছে – আদর্শভাবে ভোরে কিংবা সন্ধ্যার শেষের দিকে ঘুরতে পারেন খোঁজ মেজাজে।

জুবাইল ম্যানগ্রোভ পার্ক
জুবাইল ম্যানগ্রোভ পার্ক একটি সুন্দর জায়গা। বলতে পারেন দারুণ উপভোগ্য একটি স্পট। এই প্রাকৃতিক অভয়ারণ্যে শান্ত ম্যানগ্রোভ বনের মধ্য দিয়ে উঁচু বোর্ডওয়াক রয়েছে। ভ্রমণকারীরা শান্ত জলে হেরন, কাঁকড়া এমনকি ফ্লেমিংগো দেখতে পাবেন।

আবুধাবি কর্নিশ
দীর্ঘস্থায়ী প্রিয়, কর্নিশে বালুকাময় জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত সৈকত, পাম-রেখাযুক্ত প্রমোনাড, নিবেদিতপ্রাণ সাইক্লিং পথ ও শহরের আকাশরেখার পরিষ্কার দৃশ্য উপভোগ করা যায় এখান থেকে। তাপ তীব্র হওয়ার আগে এটি একটি আরামদায়ক হাঁটা, বাইক চালানো কিংবা সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনের জন্য উপযুক্ত আরো বেশি নিমজ্জিত অভিজ্ঞতার জন্য, নির্দেশিত কায়াকিং ট্যুর পাওয়া যায়, যা পরিবেশগত সংরক্ষণাগারের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ প্যাডেল প্রদান করে।

উম্মে আল এমারাত পার্ক
এটি বাবুধাবি শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। উম্মে আল এমারাত পার্কটি ছায়াযুক্ত পিকনিক স্পট, একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন, একটি ছোট চিড়িয়াখানা ও সবুজ খোলা জায়গা-সহ একটি দুর্দান্ত পরিবার-বান্ধব জায়গা। এটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের জন্যই উপভোগ্য, বিশেষ করে শীতল সন্ধ্যার সময় সবচেয়ে বেশি আরামদায়ক।

আল জাহিলি দুর্গ
আল জাহিলি দুর্গটি আল আইনে অবস্থিত। উনিশ শতকের এই দুর্গটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক সাথপনার মধ্যে একটি। আশেপাশের বাগান ও প্রদর্শনীগুলো ছায়াযুক্ত পরিবেশে একটি মনোরম সাংস্কৃতিক বিরতি প্রদান করে।

আল আইন মরুদ্যান
আল আইন মরুদ্যান  খুবই উপভোগ্য। এটি জাতিসংখের  ইউনেস্কোর একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। এই মরুদ্যানটি ঐতিহ্যবাহী সেচ ব্যবস্থার  একটি জীবন্ত উদাহরণ। এখানে রয়েছে ১ লক্ষ ৪৭ হাজারের  বেশি খেজুর গাছের আবাসস্থল। ছায়াযুক্ত হাঁটাপথগুলো ঐতিহাসিক ভূদৃশ্যের মধ্যে হাঁটা ও দর্শনীয় স্থান দেখার জন্য একটি শীতল, মনোরম পথ প্রদান করে। ফলে এই মরুদ্যানটি আপনাকে টানতে বাধ্য করবে।

১৮ বছর বয়সী ছাত্রী কেন তার স্বপ্নের স্কুলকে প্রত্যাখ্যান করেছিল?

ডালাস শহরের উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র লানান লা, কলেজের আবেদনপত্র পাঠানো শুরু করার অনেক আগেই তার দৃষ্টি অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থির হয়ে গিয়েছিল।
১৮ বছর বয়সী এই ছাত্রী বলেন, ‘আমি পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে হাই স্কুলে প্রবেশ করেছিলাম যে আমি ইউটি অস্টিনে পড়ব।

সবকিছুই ইউটি ছিল। আমার আলমারি ইউটি-এর পণ্যে ভরা ছিল। আমি ইউটিতে এক সপ্তাহব্যাপী স্পোর্টস মেডিসিন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিলাম, এবং আমি কখনই ভাবিনি যে আমি কোথায় যাব, কারণ এটিই ছিল একমাত্র স্কুল যা আমার মনে ছিল।’

জানুয়ারিতে লা ইউটি-তে তার গ্রহণযোগ্যতা পত্র পেয়ে যায়। কিন্তু আরেকটি কলেজ তার দৃ’ষ্টি আকর্ষণ করে এবং তাকে তার আসন্ন ক্লাসে স্থান দেয়: ডালাস ব্যাপটিস্ট ইউনিভার্সিটি। তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি কিছুটা অবাক করার মতো ছিল।

“আমি আমার মর্যাদাপূর্ণ স্বপ্নের স্কুলটি প্রত্যাখ্যান করে এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আবেদন করেছি যার নাম কেউ শোনেনি,” লা বলেন।

স্থানীয়, প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য কৌতূহলী শিক্ষার্থীরা নিঃসন্দেহে ডালাস ব্যাপটিস্ট ইউনিভার্সিটি। সম্পর্কে শুনেছেন, কিন্তু ২০২৪ সালে স্নাতক ভর্তির সংখ্যা মাত্র ২৮’শ বেশি হওয়ায়, বেসরকারি কলেজটি ইউটি অস্টিনের চেয়ে ছোট, যেখানে ২০২৩ সালের শরৎ সেমিস্টারে ৪২ হাজারের বেশি স্নাতক ভর্তি করা হয়।

টেক্সাসের এই প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্প্রতি জাতীয়ভাবে খ্যাতি অর্জন করেছে: ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ফোর্বস কর্তৃক এটিকে “নিউ আইভি” নামকরণ করা হয়েছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে এটি শিক্ষাগত কঠোরতা এবং স্নাতকোত্তর চাকরির সম্ভাবনার দিক থেকে হার্ভার্ড এবং প্রিন্সটনের মতো আইভি লীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকক্ষ। ইউটি অস্টিনের স্নাতক ব্যবসায়িক প্রোগ্রাম, যা লা আগ্রহী ছিল, ইউএস নিউজ দ্বারা দেশে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে।

যদিও ডিবিইউ-এর এই পার্থক্য নাও থাকতে পারে, এটি একটি দৃঢ় শি’ক্ষা প্রদান করে যা এর স্নাতকদের বেশিরভাগ (৭২%) শুধুমাত্র উচ্চ বিদ্যালয় ডিপ্লোমাধারী তাদের সহকর্মীদের চেয়ে বেশি আয় করতে সাহায্য করে, শিক্ষা বিভাগের কলেজ স্কোরকার্ড অনুসারে। জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুসারে, ১০ বছর পরে ডিবিইউ থেকে বিনিয়োগের উপর রিটার্ন ১ লক্ষ ১৫ হাজার হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

যদিও, ইউটি-তে স্টিকার মূল্য কম। ইউটি অস্টিনের বিজনেস স্কুলে, যেখানে লা পড়াশোনা করতেন, রাজ্যের ভেতরে টিউশন ফি ছিল ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য ১৩ হাজার ৬৭৬ ডলার, যেখানে ডিবিইউতে বছরে ৩৮ হাজার ৩৪০ ডলার খরচ হত।

যাইহোক, কেন তিনি ডিবিইউ বেছে নিলেন…?
‘প্রতিপত্তির’ চেয়ে ‘সংযোগ’ বেছে নেওয়া…….
যখন সে কলেজের কথা ভাবতে শুরু করে, তখন লা জানত যে সে আরও সাশ্রয়ী মূল্যের শিক্ষার জন্য তার নিজের রাজ্য টেক্সাসেই থাকবে। ইউটি তার তালিকার শীর্ষে থাকায়, তার ভ্রমণের জন্য “খুবই উচ্চ প্রত্যাশা” ছি’ল, সে বলে।

“কিন্তু স্বীকার করতেই হবে, আমি এটিকে যেভাবে আশা করেছিলাম সেভাবে পছন্দ করিনি,” সে বলে। “আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি স্কুলের চেয়ে অস্টিনকে একটি শহর হিসেবে বেশি ভালোবাসি।” অক্টোবরে স্কুল থেকে ছুটি থাকাকালীন, সে ডিবিইউ-এর ক্যাম্পাস ঘুরে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়।

“ওই সফরের আগে, আবেদন করার ব্যাপারে আমার একেবারেই কোনো ইচ্ছা ছিল না, এবং আমি তাতে মোটেও আগ্রহী ছিলাম না,” লা বলেন। “কিন্তু ক্যাম্পাসে হেঁটে যাওয়ার সাথে সাথেই আমি সেই বর্ধিত সংযোগ অনুভব করলাম যা আমি ইউটি-তে অনুভব করতে মরিয়া হয়েছিলাম। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার প্রয়োজনীয় সমস্ত বিষয়গুলো পরীক্ষা করে দেখতে শুরু করে।”

লা বুঝতে পেরেছিলেন যে খ্রিস্টান বিশ্বাস-ভিত্তিক অধিভুক্তি এবং ক্যাম্পাস সম্প্রদায় তার সম্ভাব্য কলেজ অভিজ্ঞতার গুরুত্বপূর্ণ দিক। সেই সফরের পরে তিনি অবাক হয়েছিলেন যে কোন স্কুলটি বেছে নেবেন তা নিয়ে তিনি দ্বি*ধা’গ্র’স্ত বোধ করেছিলেন।

“আমি জানতাম যে ইউটি-তে একাডেমিক মর্যাদা কতটা মূল্যবান, কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে সেই ফলপ্রসূ, বিশ্বাস-কেন্দ্রিক সম্প্রদায় থাকাটাই আমার কাছে বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে, এবং ডিবিইউ ঠিক এটাই অফার করে,” তিনি বলেন।

‘আমি আসলেই উন্নতি করতে চেয়েছিলাম’

জানুয়ারীতে, লা উভয় স্কুল থেকেই ভর্তির প্রস্তাব পেয়েছিল এবং জানত যে তাকে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ক্যাম্পাসে থাকাকালীন ডিবিইউ নিজেকে আরও উপযুক্ত বলে মনে করেছিল। এবং বেসরকারি স্কুলটি তাকে অনুদান এবং বৃত্তি প্রদান বন্ধ করে দেয় যার ফলে তার টিউশন খরচ অর্ধেক হয়ে যায় এবং তার মোট উপস্থিতির খরচ ইউটি অস্টিনে তার প্রদত্ত অ’র্থে’র তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়ে যায়, তিনি বলেন। তিনি ফেডারেল আর্থিক সহায়তার জন্য যোগ্য ছিলেন না, তাই বেসরকারি বা অন্যান্য বৃত্তির বাইরে, তিনি স্কুলের জন্য যে অ’র্থ পেতেন তা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরশীল ছিল।যদিও লা প্রথমে মার্কেটিং এবং ব্যবসায় পড়তে চেয়েছিলেন, তারপর থেকে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে তিনি ফিজিওথেরাপিতে বেশি আগ্রহী। তিনি এই বিষয়ে ডক্টরেট করার পরিকল্পনা করছেন এবং জানেন যে স্নাতক ডিগ্রি আরও বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। এর ফলে একটি সাশ্রয়ী মূল্যের স্নাতক ডিগ্রি আরও বেশি অগ্রাধিকার পায়।

শেষ পর্যন্ত, ডিবিইউ লা-এর জন্য আরও যুক্তিসঙ্গত হয়ে ওঠে।

“ইউটি অস্টিনের কাগজে-কলমে নিখুঁত দেখাচ্ছিল, কিন্তু একবার যখন এটি এসে পৌঁছায়, তখন এটি এখন আমার অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না, আমি যা চাইছিলাম তার সাথে এটি অনুরণিত হ’য়’নি,” তিনি বলেন। “আমি কেবল একটি ম’র্যা’দা’পূ’র্ণ নাম জাহির করার জন্য কোনও কলেজে যেতে চাইনি। আমি আসলে উন্নতি করতে চেয়েছিলাম। এবং আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি একটি ব্র্যান্ডের পিছনে ছুটছিলাম, ভবিষ্যতের জন্য নয়।”

কাগজে-কলমে ইউটি অস্টিনকে নিখুঁত দেখাচ্ছিল, কিন্তু একবার যখন এটি এসে পৌঁছালো, তখন এটি এখন আমার বর্তমান অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না, আমি যা চেয়েছিলাম তার সাথে এটি অনুরণিত হয়নি।

তার বাবা-মা তার সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি সমর্থন করেছিলেন, কিন্তু লা স্বীকার করেন যে প্রথমে তিনি তার পছন্দ অন্যদের সাথে ভাগ করে নিতে একটু নার্ভাস ছিলেন।

“আমি এমন একজন যে সত্যিই সেই একাডেমিক মর্যাদা পছন্দ করে, স্মার্ট এবং উচ্চ-প্রাপ্তিকারী হিসেবে পরিচিত, তাই শুরুতে, এই স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দেশের শীর্ষ বিদ্যালয়গুলির মধ্যে একটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলাম তা ব’লা প্রায় লজ্জাজনক ছিল,” সে বলে।

কিন্তু সেই অনুভূতিটি দ্রুতই কেটে যায়। এই মুহুর্তে সে তার সিদ্ধান্তে আত্মবিশ্বাসী, কারণ সে জানে যে সে একটি ভাল স্কুলে যাচ্ছে যেখানে সে তার পছন্দের শিক্ষা এমন একটি জায়গায় দেবে যেখানে সে ঘরে বসে অনুভব করতে পারে।

“আমি বুঝতে পেরেছি যে আমি যদি নিজেকে একজন উচ্চ-প্রাপ্তিকারী ছাত্রী হিসেবে তুলে ধরতে চাই, তাহলে আমি ডিবিউতে তে তা করতে পারব, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম মূলত খুব বেশি অর্থ বহন করে না,” সে বলে।

প্রাক্তনকে ভুলে থাকার ৭ টি উপায়

হাজার বছর একসাথে থেকেও কাছের মানুষটাকে চেনা যায় না আবার দুই দিনেও অনেনকে চিনে ফেলা যায়। কিন্তু কাছের মানুষ যে কখন কাচের মানুষ হয়ে যাবে তা কেউই-ই নিশ্চিত করে বলতে পারে না। তাছাড়া সম্পর্ক হয় বলেই তো সম্পর্ক ভাঙ্গে। আর এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু এই ভাঙ্গা-গড়ার খেলার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়। ভুলতে হয় অতীতকে, ভুলতে হয় প্রাক্তনকে। তবে মুখে বললেই তো আর হয় না। চেষ্টা করলে হয়তো অনেকটাই ভুলে থাকা যায়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ভুলে থাকবেন প্রাক্তনকেঃ

১। প্রিয় মানুষটির সাথে বিচ্ছেদ হয়েই গেছে, তাই এখন প্রথম কাজ হচ্ছে তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করা। আসলে যোগাযোগ রেখে কাউকে কখনও ভোলা যায় না। বর্তমান সময়ে অনেকেই বলেন- বিচ্ছেদের পরে তারা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখছেন। কিন্তু এটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষতিকর হয়। কারণ প্রিয় মানুষটাকে বারবার দেখলে বা তার সাথে কথা বললে সেই পুরোনো স্মৃতিগুলোই বারবার মনে করিয়ে দেয়। ফলে কষ্ট না কমে বরং বাড়তেই থাকে।

২। মানুষ কাজের অবস্থায় থাকলে অনেক কিছুই ভুলে থাকতে পারে। কিন্তু যখন হাতে কোনো কাজ না থাকে তখন জীবনের সকল স্মৃতি চোখের সামনে ভাসতে থাকে। তাছাড়া ব্যর্থতার স্মৃতিগুলোই সবচেয়ে বেশি তাড়িয়ে বেড়ায়। তাই নিজেকে যতটা ব্যস্ত রাখবেন প্রাক্তনকে ভুলে থাকা আপনার জন্য ততটা সহজ হবে।

৩। বিচ্ছেদ হলেই মানুষ একাকিত্বকে আপন করে নেয়। কিন্তু এই অভ্যাসটাকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া উচিত না। কারো সাথে বিচ্ছেদ হলে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের মানুষের সাথে সময় দেবেন। সম্ভব হলে দূরে কোথায় ঘুরে আসবেন। মনে রাখবেন স্মৃতি ভোলার অন্যতম ঔষধ হলো স্থান পরিবর্তন।
৪। যার সাথে বিচ্ছেদ হয়েছে তার দেওয়া উপহারগুলো চোখের সামনে থেকে দূরে রাখুন। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডি থেকে দূরে থাকবেন। বারবার তার দেওয়া বা আপনার পাঠানো ম্যাসেজ চেক করবেন না। তার আইডি আনফলো করে রাখুন ও ইনবক্সের সকল ম্যাসেজ ডিলেট অথবা আর্কাইভে পাঠিয়ে দিন। তবে এক্ষেত্রে তাকে ব্লক করে দেওয়া হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম কাজ।

৫। প্রাক্তনের উপর রাগ বা জেদ পুষে রাখবেন না। পারলে তাকে ক্ষমা করে দিন। ক্ষমা করে দিলে আপনার আত্মায় প্রশান্তি কাজ করবে আর তার প্রতি তেমন ক্ষোভ কাজ করবে না। মনে রাখবেন কারো প্রতি যত রাগ বা ক্ষোভ পুষে রাখবেন তাকে তত বেশি মনে পড়বে।

৬। বন্ধু-বান্ধব বা অন্য কাউকে দিয়ে প্রাক্তনের উপর নজরদারি করবেন না। অথবা তার সম্পর্কে অতিরিক্ত খোঁজ-খবর নেবেন না। কারো সম্পর্কে যত খোঁজ নেবেন তার প্রতি তত ভালোবাসা অথবা ঘৃণা জন্মাবে। কিন্তু মনে রাখবেন প্রাক্তনের উপর ঘৃণা অথবা ভালোবাসা দুটোই আপনার জন্য ক্ষতিকর।

৭। কারো সঙ্গে বিচ্ছেদ হলেই তার প্রতি নেতিবাচক ধারণা করবেন না। মনে রাখবেন বিচ্ছেদ শুধু বিপরীত মানুষটার কারণেই হয় না। এখানে নিজের দোষও থাকতে পারে। তাই বিচ্ছেদের জন্য যারই বেশি ভূমিকা থাকুক না কেন সেটাকে অতীত ভেবে নতুন কিছু নিয়ে চিন্তা করুন।

লেখকঃ রেদোয়ান মাসুদ

আপনি কি পর্যাপ্ত পরিমাণে রোদ ও ভিটামিন ডি পাচ্ছেন?

ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের জন্য খুবই দরকারি একটি উপাদান। এক ভিটামিন ডি আমরা কোথা থেকে পাব? আপনি কি জানেন আপনার ত্বক যখন সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসে তখন আপনার শরীর ভিটামিন ডি তৈরি হয়? হয়তো জানেন, অথবা না। তবে সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি পাওয়া সত্ত্বেও, ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশ মানুষের ভিটামিন ডি-এর অভাব থেকে যায়।

এর কারণ হলো আপনার ত্বকের ভিটামিন ডি তৈরি না হওয়ার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে ঋতু, মেঘের উপস্থিতি, দিনের সময়, বায়ু দূষণ, বয়স, রং ও আপনি যথাযথ সানস্ক্রিন ব্যবহার করছেন কিনা।

আবার খাবারে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি প্রাকৃতিকভাবে উপস্থিত না থাকা। ফলে আমাদের পরিপূরক গ্রহণ করতে হয়।

ভিটামিন ডি শরীরের জন্য কেন দরকার?

হাড়ের স্বাস্থ্যে ভিটামিন ডি’র একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এর অভাব হাড়ের ভর কমায়, অস্টিওপোরোসিস, শক্ত হয়ে যাওয়া ও পেশীতে ব্যথা হয়।

ভিটামিন-ডি ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরামত ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এই কারণেই শরীরে ২০০টি ভিন্ন ধরণের কোষ রয়েছে যাদের ভিটামিন ডি-এর রিসেপ্টর রয়েছে।

অবশেষে, গবেষণায় দেখা গেছে যে ভিটামিন ডি হতাশা, ওজন বৃদ্ধি, স্তন ক্যা*ন্সা’র, প্রোস্টেট ক্যা*ন্সা’র, কোলন ক্যা*ন্সা’র, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও অটোইমিউন রোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। আর এই কারণেই আপনাকে পর্যাপ্ত ভিটামিন-ডি পেতে আগ্রহী করে তুলবে!

আপনার ভিটামিন ডি-এর মাত্রা পরীক্ষা করুন

রোদে গেলে আপনি ভিটামিনটি যথেষ্ট পরিমাণে পাচ্ছেন কিনা তা জানার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ডাক্তারকে একটি সাধারণ রক্ত ​​পরীক্ষা করতে বলা। আপনার ভিটামিন ডি-এর রক্তের স্তরের উপর নির্ভর করে, আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সম্পূরক গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন।

আরও রোদ নিন 

গরমকালে আপনি সহজেই সূর্য থেকে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার আইইউ ভিটামিন-ডি পেতে পারেন। এরজন্য আপনার হাতের তালু ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য সূর্যের আলোতে উন্মুক্ত রাখতে হবে।

আপনার পুরো শরীরকে সূর্যের আলোতে উন্মুক্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই। এটা নিশ্চিত করুন যে আপনিও রোদে পোড়া না হন। আসলে, হাতের তালু ছাড়া মুখ ও ত্বকের বাকি অংশ ঢেকে রাখা উচিত। তবে হাতের তালুতে সানস্ক্রিন কিংবা সানব্লক ব্যবহার করবেন না। কারণ এটি ভিটামিন ডি সংশ্লেষণকে বাধাগ্রস্থ করবে।

তবে আপনি একটি ভিটামিন-ডি ল্যাম্প কিনতে পারেন। ল্যাম্পটি উচ্চ-তীব্রতার অতিবেগুনী-বি রশ্মি তৈরি করে যা ত্বকে ভিটামিন ডি সংশ্লেষণকে ট্রিগার করে। এটি বিশেষ করে বয়স্ক লোকদের জন্য সহায়ক যারা বাইরে কম সময় কাটান ও পর্যাপ্ত রোদ পান না।

ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে 

আপনি যদি চর্বিযুক্ত মাছ ও মাছের তেল খেতে পছন্দ করেন তাহলে খাবার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি নাও পেতে পারেন। সৌভাগ্যক্রমে, বাজারে পাওয়া অনেক দুগ্ধজাত পণ্য ও সিরিয়াল ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ। মাশরুম ও ডিমেও এই দরকারি ভিটামিনের পরিমাণ কম থাকে।

পরিপূরক গ্রহণ করুন

আপনি যদি এই খাবারগুলো আকর্ষণীয় মনে না করেন বা আপনার অ্যালার্জি থাকে ও আপনি জানেন যে আপনি পর্যাপ্ত রোদ পাচ্ছেন, তাহলে ঘাটতি এড়াতে পরিপূরক গ্রহণের কথা বিবেচনা করুন। এটি বিশেষ করে পোস্টমেনোপজাল মহিলাদের, দীর্ঘমেয়াদী স্টেরয়েড গ্রহণকারী লোকদের, বয়স্কদের, সেইসাথে গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য প্রযোজ্য।

তবে হঠাৎ করে সাপ্লিমেন্ট খাওয়া শুরু করবেন না। সবার আগে আপনি ভিটামিন ডি-এর মাত্রা পরীক্ষাকরুন।  তারপর সঠিক সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন।

কথোপকথন-৮ – রেদোয়ান মাসুদ

– এ কী, তুমি হাসছ যে!
– কেন, হাসতে নেই?
– কিন্তু এই হাসি যে আমাকে…।
– থামলা কেন, বলেই ফেলো।
-তুমি কি জানো না, হাসিও কারো কারো মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়?
– ছিঃ! ওসব বাজে বকতে নেই। কিন্তু তোমার চোখে জল কেন?
– শুধু কাঁদলেই কি চোখে জল আসে?
– আজীবন তো তাই দেখে এলাম, এ কী তুমি আবার হাসছ?
– ঐ যে তোমার ব্যাকুল মন, আমার মনটিও যে প্রশান্ত হয়ে গেল?
– যাও, আমার চোখের সামনে থেকে সরে দাঁড়াও। মেয়েমানুষের কাছে আসতে নেই।
– মেয়েমানুষ কি স্বপ্নে দেখা পরি, যে কাছে গেলেই উড়ে যাবে?
– উড়ে যায় না, প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়।
– ভোমরা কিন্তু ফুলের মধু খায় না, জমিয়ে রাখে।
– কিন্তু মানুষ মধু খেয়ে হারিয়ে যায়।
– ভালোবাসা ফুরানোর জিনিস নয়। কাছে এলে…।
– থামলা কেন? বারবার এমন করলে আমার বুক কাঁপে যে।
– দেখি তো কোথায় কাঁপছে?
– ছিঃ! ওসব দেখতে নেই।
– তোমার চোখে আজ এত ধার কেন? আমি যে খুন হয়ে যাচ্ছি।
– হলাম না হয় আজ খুনি। কিন্তু তোমার চোখেও যে অনেক ধার।
– তাহলে আমিও খুনি?
– তাই তো দেখছি। আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করব, উত্তর দেবে তো?
– কেন দেবো না? কিন্তু সব কথা কি আর মুখে বলা যায়?
– মুখে যা বলা যায় না, তা চোখে বলে দিলেই তো হয়।
– হ্যাঁ, এজন্যই তো আজ খুনের অপরাধে দুজন একই খাঁচায় বন্দি। বলো তুমি কী জানতে চাও?
– বলবে তো, সত্যি সত্যি?
– আজ না হয় একটু মিথ্যা বললাম, তাই বলে কি মেনে নিতে পারবে না?
– কিন্তু তোমার চোখ যে আজ সব সত্যি বলে দিচ্ছে।
– শুধুই চোখ?
– এ কী! তুমি কাঁপছো যে?
– সেটা কি তোমরা বোঝো? বুঝলে আর একথা জিজ্ঞেস করতে না।
– দেখি তো কোথায় কাঁপছে?
– ভালো হচ্ছে না কিন্তু ছাড়ো বলছি।
– ছাড়তে তো ভালোবাসি নাই। এ কী, তুমি একেবারে শান্ত হয়ে গেলে যে!
– আগেই তো বলেছি, তোমরা আসলে মেয়েদের মন বোঝো না।
– না বুঝলে কী করে তুমি শান্ত হলে?
– ছিঃ! অমন করো না তো, বকা দেবো কিন্তু।
– বকা? হা হা হা।
– কেন বকতে নেই?
– ওটা বকা না, মধু।
– মধু কিন্তু বেশিদিন থাকলে বিষ হয়ে যায়।
– আমি সেই বিষেই মরতে চাই।

আগস্ট ২০২২
কাঁটাবন, ঢাকা

কথোপকথন-৭ – রেদোয়ান মাসুদ

– এই যে, শুনছ?
– কে ডাকছে পেছন থেকে? কণ্ঠটা এত পরিচিত কেন?
– একটু পেছন ফিরে তাকাবে?
– হায়! হায়! আপনি?
– হ্যাঁ, আমি। অবাক হলে যে!
– না, এই আর কী!
– এত সহজেই তুমি এতটা বদলে গেলে?
– আমি? ময়লা পোশাকের সেই পুরনো গন্ধটা নাকে যায়নি? অথচ তোমার শরীরে বিদেশি সুগন্ধির ঘ্রাণ।
– তাই বলে কি আমাদের সম্পর্কটা এতটা নিচে নেমে গেল?
– ম্যাডাম! নিচে নয়, অনেক ওপরে, অনেক।
– আমি আজ সেই পুরনো ডাকটাই শুনতে চাই।
– আপনারা এখন অনেক বড়লোক, তুমি বললে অপমান করা হবে।
– কিন্তু ভালোবাসার যে অপমান হচ্ছে, সেটা?
– অপমান? হা হা হা! যেদিন দুর্গন্ধ পোশাকের কথা বলে আমাকে ফেলে গিয়েছিলে, সেদিন ভালোবাসার অপমান হয়নি?
– আজ বুঝি তার বদলা নিচ্ছ, তাই না?
– বদলা নয়, সম্মান করছি। বড়লোকদের সম্মান দিয়ে কথা বলতে হয়।
– আমাকে আজ যত খুশি অপমান করো কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তোমার পায়ে পড়ি আর একবারের জন্যও আমাদের ভালোবাসাকে অপমান করো না।
– ভালোবাসা! ভালোবাসা বলতে আবার কিছু আছে নাকি? টাকা হলে ওসব কিনতে পাওয়া যায়।
– হ্যাঁ, ঠিকই বলেছ। আমিও তাই হয়েছি। দামি ফ্ল্যাটবাড়িতে থাকি। শরীরটা ছিন্নভিন্ন করে খায় কিন্তু…
– কিন্তু কী? তুমি কাঁদছ?
– না, আমার মুখের দিকে তাকিয়ে দ্যাখো।
– হায়! হায়! তুমি হাসছ যে?
– এই যে তোমার ডাক, আমার হৃদয়ে প্রশান্তির ছোঁয়া দিয়ে গেল।
– দুঃখিত, আমাকে ক্ষমা করবেন, তুমি ডেকে আপনাকে অসম্মান করাটা ঠিক হয়নি।
– প্লিজ আমাকে আর কাঁদিয়ো না।
– আমি কাঁদিয়েছি? এই যে দ্যাখো জল পড়তে পড়তে চোখের নিচে কালি জমে গেছে।
– আমাকে ক্ষমা করো প্লিজ। আমি যে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছি।
– কীসের প্রায়শ্চিত্ত? ঐ যে দামি গাড়ি, বাড়ি, লাল পানি! আরো কত কী!
– হ্যাঁ, ঠিকই বলেছ। তবে…
– তবে কী আবার, বড়লোকের বিরাট কারবার।
– বড়লোক! হা হা হা!
– হাসছ কেন? সুখ বুঝি এখন রাশিরাশি থাকে তাই না?
– সুখ! ঐ যে মদের গন্ধ। শোনো, মদের নেশায় ভালোবাসা থাকে না, থাকে পশুত্ব। শুধু জোর করে শরীরটাকে ছিন্নভিন্ন করে খায়। আর নেশা কেটে গেলে কাছে তো দূরের কথা, দূরেও থাকে না।
– এসব আমরা বুঝি। আমাকে এখন যেতে হবে। মায়ের ঔষধের টাকা জোগাড় করে তারপরে ঘরে ফিরতে হবে।
– মা?
– হ্যাঁ, মা।
– কিন্তু তার কী হয়েছে?
– ভুলে গেছ সব? তোমার সেই অপমানের কথা শুনে মা যে সেদিন স্ট্রোক করেছিল।
– আমাকে ক্ষমা করো। আমি তোমার মায়ের চিকিৎসার ভার নিতে চাই।
– চিকিৎসার ভার? আমরা গরিব হতে পারি কিন্তু এতটা ছোটলোক না।
– প্লিজ! আমাকে আর অপমান করো না।
– আমার সামনে থেকে এখন যাও, আমাকে কাজে যেতে হবে।
(৮ ঘণ্টা পর)
– হায় হায়! তুমি এখনও এখানে?
– আবার এসেছি।
– কেন এসেছ?
– তোমাকে দেখতে, কতদিন হয় প্রাণ খুলে শ্বাস নিই না। আজ যে আবার প্রাণটি জুড়িয়ে গেল।
– ঐ যে লাল পানি আছে না? সেগুলো খাও! তাতে অক্সিজেনের মাত্রা অনেক বেশি থাকে।
– প্লিজ, আর খোঁটা দিও না। এ কী তুমি কাঁদছ?
– ও কিছু না, আমার সামনে থেকে সরে দাঁড়াও।
– তাই বলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবে?
– আবার বলছি আমার পিছু নিও না। ঔষধ খাওয়ার জন্য মা বসে আছে।
– আমিও যাবো, প্লিজ! একটু আস্তে হাঁটো।
– আমার সেই সময় নেই। আর কে কীভাবে হাঁটবে সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার।
(২০ মিনিট পর)
– মা, মা, মা! তুমি এভাবে চলে গেলে? মৃত্যুর সময় তোমার মুখটিও দেখতে পেলাম না। মা আমি এখন কাকে নিয়ে থাকবো? আর কীভাবেই বাঁচবো? তুমি যে আমাকে কিছুই বলে গেলে না।
(১ মাস পর)
– মা তুমি এভাবে ঘুমিয়ে গেলে। আমি এখন আর কার জন্য কাজে যাবো?
– আমার জন্য, মানুষ তো আর একা থাকে না। প্লিজ ওভাবে কেঁদো না, শরীর খারাপ করবে যে।
– তোমার জন্য? হা হা হা! প্লিজ! প্রাপ্তি তুমি ফিরে যাও। নীড়হারা পাখিকে একা থাকতে দাও।
– তা আর হয় না। হারিয়ে যাওয়া পাখিও যে নীড়ে ফিরেছে। এখন চলো নতুন স্বপ্ন বুনি।
– তুমি ফিরে যাও প্রাপ্তি। ভাঙা গ্লাস কখনো জোড়া লাগে না।
– আমি ফিরে যেতে আসিনি, শুধু তোমার হয়েই থাকতে এসেছি।
– পৃথিবীতে কেউ কারো নয়, শুধু সুখে থাকার আশায় কাছে টানার ব্যর্থ প্রত্যয়, আর দূরে চলে যাওয়ার এক বাস্তব অভিনয়।

০৪.১৫ এএম
১৭.০২.২০২৩
কাঁটাবন, ঢাকা

Exit mobile version