বৃষ্টি সাথে ভালোবাসার কি সম্পর্ক?

বৃষ্টি এমন এক জিনিস যখনই টপ টপ করে পড়তে থাকে মানুষের হৃদয়ের মাঝে কেমন যেন করে ওঠে। তাছাড়া বৃষ্টির দিনে মানুষের মনে নতুন কোনো অনুভূতি জাগ্রত হয়। কাছের মানুষ কিংবা দূরের যেই হোক না কেন তার ছবিখানা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। হতে পারে ভালোবাসা কিংবা বিরহ। বিরহও তো ভালোবাসারই একটা অংশ। আর প্রকৃত ভালোবাসা বিরহের মধ্যেই বিদ্যমান।

এই বৃষ্টি নিয়ে কবি সাহিত্যিকরা লিখে গেছেন না কবিতা ও ছন্দ। বৃষ্টির সাথে ভালোবাসার গভীর সম্পর্ক আছে। এটা চিরন্তন সত্য। সুখের হোক কিংবা দুঃখের, বৃষ্টি রোমান্টিক সম্পর্কের প্রতিটি মুহূর্তকে আরও তীব্র করে তোলে। সঙ্গীত জগতে অনেক গানের কলি বর্ষাকাল থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আসে, প্রেম থেকে হৃদয় ভাঙার গভীরতা ধারণ করে।

বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা আলতো করে আপনার শরীরে আদর করার অনুভূতি হলো এক বিশুদ্ধ জাদু। যেন আকাশ থেকে নেমে আসা স্বর্গের ছোয়া। বৃষ্টির ফোঁটার একটি অনন্য অভিজ্ঞতা রয়েছে। বৃষ্টির ফোঁটা কানে ফিসফিস করে, প্রেমে পড়ার সাহস জোগায়। অন্যদিকে মিষ্টি গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হৃদয়কে ভালোবাসা ও রোমান্সে জাগায়।

বর্ষাকাল হলো বছরের সবচেয়ে রোমান্টিক সময়গুলোর একটি। তবে যে সব সময় সুখের হয় তা কিন্তু নয়,দুঃখজনকও হতে পারে। বৃষ্টি উপভোগ করার প্রত্যেকের নিজস্ব উপায় আছে। শিশুরা বৃষ্টির মধ্যে খেলতে পছন্দ করে, অন্যদিকে তরুণরা প্রায়শই বৃষ্টিতে রোমান্স খুঁজে পায়, আনন্দ ও হৃদয়ে ব্যথা; উভয়ই অনুভব করে থাকে। বয়স্ক লোকেরা চায়ের কাপে চুমুক দেয়ার সময় বৃষ্টি উপভোগ করে, প্রিয়জনদের সাথে কাটানো দারুণ স্মৃতিগুলো স্মরণ করে। প্রতিটি মানুষের বৃষ্টি উপভোগ করার এক অনন্য স্বাদ রয়েছে।

যখন মানুষের মনে ভালোবাসা পূর্ণভাবে ফুটে ওঠে তখন মনে হয় যেন বর্ষাকাল আনন্দ ও উত্তেজনা নিয়ে আসে। বৃষ্টি আসার পাগ মুহূর্তে আবহাওয়া যেন প্রেমের সূচনার ইঙ্গিত দেয়। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা মাটিতে পড়ার সাথে সাথে তারা একটি প্রিয় সুরের সাথে নাচতে থাকে। আকাশ থেকে পড়ে মাটি স্পর্শ করা বৃষ্টির ফোঁটাগুলো সবচেয়ে সূক্ষ্ম সুগন্ধির মতো একটি সুবাস নির্গত করে। বৃষ্টি পড়া শেষ হলে একটি রংধনু আবির্ভূত হয়, যা এমন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তৈরি করে তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।

যখন একতরফা প্রেম অপ্রতিদানযোগ্য অনুভূতির বেদনার সঙ্গে একাকার হয়ে যায়, তখন বর্ষাকাল গভীর তাৎপর্য ধারণ করে। বৃষ্টির আগে জমে থাকা কালো মেঘগুলো মন ও হৃদয়কে আ’ঘা’তকারী স্মৃতির বন্যার মতো। এই মুহূর্তে হৃদয় সেই স্মৃতির বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে।

মানুষ বৃষ্টিকে উপভোগ করার জন্য গা এলিয়ে দেয়। কেউ-বা হাত পেতে বৃষ্টির স্পর্শ নেয়। কিন্তু সেই বৃষ্টির স্পর্শ তখন হৃদয়ের মাঝে ঝড় তুলে যায়। হয়তো তখন কাউকে খুব করে পেতে ইচ্ছে করে। কারো সাথে ভিজতেও ইচ্ছে করে। হয়তো সবার ভাগ্যে সব কিছু হয় না। তারপরেও মানুষ চায় বৃষ্টির মধ্যে কারো হাতে হাত রেখে একটু হাঁটতে। স্পর্শে বুকের মাঝে শীতলতা অনুভব করতে।

কিন্তু সত্যি বলতে এটা খুব সুন্দর মনে হয়। আকাশ থেকে ঝরে পড়া এক ফোঁটা জল এই বিশাল পৃথিবীর আয়না হতে চাইছে।

এটা আবহাওয়াকে ঠান্ডা করে তোলে ও আমাদের হৃদয়কে উষ্ণতায় ভরে দেয়। মানুষ বৃষ্টির ফোঁটায় মুখ ভরে রাখতে ভালোবাসে।

গাছ, ফুল, পাখি ইত্যাদিকে খুবই খুশি দেখায়। এর এক স্পর্শেই সবকিছু সুন্দর হয়ে ওঠে। ঠান্ডা বাতাস মানুষের মুখ স্পর্শ করে। বাতাস নারীদের চুল জট পাকিয়ে দেয় এবং ঠান্ডা জল সবকিছু ঝরে পড়ে অনুভব করায় যে সে বেঁচে আছে। এটা মানুষকে মনে করিয়ে দেয় যে জিনিসগুলো কতটা সুন্দর ও ভালো হতে পারে।

বৃষ্টি, কালো মেঘ মানুষের হৃদয়ের তৃষ্ণা নিবারণ করে। শুধু সাময়িকভাবে এটি মানুষের ভেতরে থাকা শূন্যতা পূরণ করে। এটি মানুষের সমস্ত দুঃখ, অপূর্ণতা, অশ্রু ধুয়ে দেয়, অবিশ্বাস করে, নতুন উৎসাহ ও প্রেরণায় পূর্ণ করে। বৃষ্টিতে কখনও ধনী-দরিদ্র, মানুষ-প্রাণী, জীবিত-নির্জীবদের মধ্যে বৈষম্য করে না। বৃষ্টি সবার মনেই অনুভূতি জাগায়। বৃষ্টি নিয়ে ক্যাপশন

সৌদি আরবের ৫ টি সেরা দর্শণীয় স্থান

সৌদি আরব বহুকাল যাবত বহির্বিশ্ব থেকে একরকম অন্তরালেই ছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে দেশটি পালটে যাচ্ছে। দেশটি এক সময় একেবারে রক্ষণশীল ছিল। কিন্তু দিন দিন সেখান থেকে বেরিয়ে আসছে দেশটি। এখন আর সেখানে হিজাব বা ঐতিহ্যবাহী লম্বা পোশাক বাধ্যতামূলক নয়। নারীরা স্টিয়ারিং হুইলে, পাহাড়ে, অফিসে—সব জায়গায় নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছেন। ভিশন-২০৩০ এর আলোকে উপসাগরীয় এই দেশটির সরকার পর্যটনকে সামনে রেখে খুলে দিচ্ছে নতুন দিগন্ত। যেখানে আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন ভ্রমণকারীদের জন্য হাতছানি দিচ্ছে। আজ আমরা সৌদি আরবে সেরা ৫টি দর্শণীয় স্থান নিয়ে আলোচনা করব-

১. রিয়াদ: মরুভূমির রাজকীয় উজ্জ্বলতা

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ এখন এক মহা নির্মাণযজ্ঞের শহর। বিলাসবহুল হোটেল, ফাইভ-স্টার ব্র্যান্ড ও উচ্চাভিলাষী মেট্রো রেল প্রকল্প দিয়ে শহরটি যেন ভবিষ্যতের ক্যানভাস হয়ে যাচ্ছে। তবে প্রযুক্তির ঝলক ছাপিয়ে চোখে পড়ে আত-তুরাইফের মাটির ইটের দুর্গ। যা আল-সৌদ রাজবংশের সূতিকাগার। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐত্যিহ্যের স্বীকৃতিতে স্থানটি এখন নতুন আলো ও আধুনিক জাদুঘরের ছোঁয়ায় পুনর্জীবিত।

২. তাবুক: ভবিষ্যতের গেটে দাঁড়িয়ে

উত্তরের শহর তাবুক—একসময় নিঃসঙ্গ মরুভূমি ছিল। এখন এটি “দ্য লাইন” প্রকল্পের সূচনাস্থল। এখানে গড়ে উঠছে ১৭০ কিমি দীর্ঘ, কার্বন-মুক্ত এক বিস্ময়কর শহর। নিকটবর্তী ট্রোজেনা প্রকল্পে কৃত্রিম হ্রদ আর বরফঢাকা স্কি রিসোর্ট গড়ে তোলা হচ্ছে, মরুভূমির বুকে যা শুনলে আজও অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে—এ কি স্বপ্ন, না বাস্তব?

৩. আল উলা: মরূদ্যানের রহস্যঘেরা সৌন্দর্য

আল উলা হলো সৌদি আরবে পর্যটনের মুকুটমণি। পৃথিবীর বৃহত্তম আয়নাযুক্ত ভবন মারায়া এখানে অবস্থিত। যা এক শিল্প ও সঙ্গীতের আধুনিক কেন্দ্র। চারদিকে দারুণ পাহাড়, পাথরের হাতি আকৃতির শিলা ও প্রাচীন হেগরা নগরীর ধ্বংসাবশেষ এই অঞ্চলকে ইতিহাস ও রোমাঞ্চের মিলনস্থলে পরিণত করেছে। রাতে খোলা আকাশের নিচে খাবারের ট্রাক, সংগীত ও বরফ-ঠাণ্ডা পানীয়—সব মিলিয়ে যেন এক মরুদ্যান ফেস্টিভ্যাল।

৪. হেগরা: ইতিহাসের সোনালী ছায়া

পেত্রার যমজ শহর হেগরা। যেটি সৌদি আরবের প্রথম ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। এটি এখন বিশ্ব পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত। প্রতিটি শিলা ও খোদাই যেন একেকটি জীবন্ত গল্প বলে যাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি ও সংরক্ষণশীলতার সংমিশ্রণে এই শহরটি ইতিহাসে ফিরেছে নতুন প্রাণ নিয়ে।

৫. মদিনা: আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যের নীরব প্রতিচ্ছবি

ইসলাম ধ’র্মে’র দ্বিতীয় পবিত্রতম শহর মদিনা এখন অমুসলিমদের জন্যও আংশিকভাবে উন্মুক্ত। যদিও মসজিদে নববীতে প্রবেশের অনুমতি নেই। তবে পুলম্যান জমজম হোটেলের উচ্চতলা থেকে সেই দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষের শান্ত পদচারণায় পুরো শহর যেন আধ্যাত্মিকতায় মোড়া এক মহাকাব্যের দৃশ্য।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব কেবল এক রহস্যময় মরুভূমি নয়। বরং এক পরিবর্তনশীল রূপকথার রাজ্য। আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের অপূর্ব সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই দেশটি এখন বিশ্ব পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত, অভ্যর্থনামূলক ও চমকে দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতায় ভরপুর। এখন আপনিও বেরিয়ে পড়তে পারেন সৌদি দেখার আকুলতা নিয়ে।

দুবাইয়ের ৫ টি আকর্ষণীয় স্থান

দুবাই বিশ্বের একটি অন্যতম শহর। এটিকে অবশ্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্য নগরীও বলা হয়। যেখানে বিলাসিতা, আধুনিকতা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একত্রে মিশে গেছে। গগনচুম্বী অট্টালিকা, স্বর্ণালি মরুভূমি, বিলাসবহুল হোটেল, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও চমকপ্রদ অভিজ্ঞতার জন্য দুবাই আজ বিশ্ব ভ্রমণকারীদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। চলুন তাহলে আজ জেনে নিই, দুবাই ভ্রমণে যে ৫ টি স্থান আপনাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেবে সে সম্পর্কে-

১। বুর্জ খলিফা ও দুবাই মল: আধুনিক শহরের হৃদস্পন্দন

পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফা শুধু স্থাপত্যের নিদর্শন নয়, এটি দুবাই শহরের মুকুট হিসেবে পরিচিত। ‘অ্যাট দ্য টপ’ পর্যবেক্ষণ ডেকে দাঁড়িয়ে শহরের ৩৬০ ডিগ্রি দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করে দেবে। যেখানে প্রতি বছর কয়েক কোটি ভ্রমণকারী ঘুরতে আসে। বুর্জ খলিফার সঙ্গেই রয়েছে বিশাল দুবাই মল-বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শপিং ও বিনোদন কেন্দ্র। এখানে রয়েছে ইনডোর আইস স্কেটিং রিঙ্ক, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পার্ক, জলজ চিড়িয়াখানা, হিউম্যান ওয়াটারফল ও বইপ্রেমীদের স্বর্গ ‘কিনোকুনিয়া’।

২। দ্য পাম, জুমেইরাহ: বিলাসিতা ও প্রকৃতির সম্মিলন

পাম আকৃতির এই কৃত্রিম দ্বীপটি বিলাসবহুল হোটেল, আন্ডারওয়াটার স্যুট ও চমকপ্রদ রিসোর্টের জন্য বিখ্যাত। এটি দুবাইয়ের আরেকটি বড় আকর্ষণ। ‘দ্য ভিউ অ্যাট দ্য পাম’-এ উঠে সমুদ্র ও আকাশরেখার মিলন উপভোগ করা যায়। আর ‘আটলান্টিস অ্যাকোয়াভেঞ্চার’ পার্কে কাটান দিনভর অ্যাডভেঞ্চার। পাম লেগুনে ৫-তারকা ডাইনিং আর নৌকা ভ্রমণ অভিজ্ঞতা যোগ করবে অতিরিক্ত আনন্দ।

৩। দুবাই মেরিনা: আধুনিক শহরের বিলাসী প্রান্তর

গগণচুম্বী অট্টালিকা, বিলাসবহুল ইয়ট আর জলপথে জ্বলজ্বলে শহর হলো দুবাই মেরিনা। এখান থেকে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী ধাউ ভ্রমণ, এক্সক্লুসিভ ইয়ট ডিনার কিংবা পৃথিবীর দীর্ঘতম শহুরে জিপলাইন এক্স-লাইন এর মতো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। সঙ্গে জেবিআর এর দ্য ওয়াক বোর্ডওয়াক, সমুদ্রতীরবর্তী রেস্তোরাঁ ও ইনফিনিটি পুলে এক ভিন্ন মাত্রার স্বস্তি দেয়।

.৪। হাত্তা ড্যাম: প্রকৃতির কোলে এক শান্তিপূর্ণ পালাবদল

দুবাই শহর থেকে একটু দূরে, পাহাড়ঘেরা হাত্তা হল প্রকৃতিপ্রেমীদের স্বপ্নের এক অন্যতম গন্তব্য। নীলাভ হ্রদ, প্রাচীন দুর্গ, পাহাড়ি ট্রেইল ও অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস-সব মিলিয়ে এখানে রয়েছে নিঃসন্দেহে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। আপনি চাইলেই অংশগ্রহণ করতে পারেন কায়াকিং, মাউন্টেন বাইকিং কিংবা একটি রাত কাটাতে পারেন তারা ভরা গ্ল্যাম্পিং ক্যাম্পে।

৫। মরুভূমি সাফারি: বালুর রাজ্যে এক আরবীয় কল্পনা

দুবাইয়ের আত্মা খুঁজে পাবেন তার বিশাল মরুভূমিতে। টিলা বালিশিং, উটে চড়া, কোয়াড বাইকিং, কিংবা গরম বেলুনে করে সূর্যোদয় উপভোগ-প্রতিটি মুহূর্তে থাকবে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। রাতের বেলায় আরবীয় শিবিরে উপভোগ করুন ঐতিহ্যবাহী নাচ, স্থানীয় খাবার আর ফ্যালকন শো—যা আপনাকে একেবারে সময়ের সীমানা ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে।

আসলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্য নগরী দুবাই শুধু একটি শহর নয়, এটি এক বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতা। আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের মেলবন্ধন, প্রকৃতি আর প্রযুক্তির যুগলবন্দি-সব মিলিয়ে এক অভূতপূর্ব ভ্রমণ স্মৃতি আপনার অপেক্ষায়। তাই আর নয় অপেক্ষা। আজই বেড়িয়ে পড়ুন দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে আর উপভোগ করুন স্বর্গীয় অনুভূতি।

গ্রীষ্ম শুরু হওয়ার আগে আবুধাবি ভ্রমণের সেরা ৫ টি দর্শনীয় স্থান

উপসাগরীয় দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় দরজায় নক দিচ্ছে। স্থানীয় তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আবুধাবির লোনাপানি, সবুজ স্থান ও মরুদ্যানের কারণে, মৌসুমের তাপ পুরোপুরি শুরু হওয়ার ঠিক আগে মুহূর্তে বাইরের পরিবেশ উপভোগ করার সুযোগ এখনো আছে।

দেশটির জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র (এনসিএম) অনুসারে, আবুধাবির বাসিন্দারা সামনে একটি উষ্ণ, সাধারণত পরিষ্কার সপ্তাহ আশা করতে পারেন। আকাশ বেশিরভাগ সময় পরিষ্কার থাকবে। যারা গ্রীষ্মের পূর্ববর্তী আবহাওয়ার সর্বাধিক সুবিধা নিতে চান, তাদের জন্য এখানে কিছু শীর্ষ বহিরঙ্গন স্থান রয়েছে – আদর্শভাবে ভোরে কিংবা সন্ধ্যার শেষের দিকে ঘুরতে পারেন খোঁজ মেজাজে।

জুবাইল ম্যানগ্রোভ পার্ক
জুবাইল ম্যানগ্রোভ পার্ক একটি সুন্দর জায়গা। বলতে পারেন দারুণ উপভোগ্য একটি স্পট। এই প্রাকৃতিক অভয়ারণ্যে শান্ত ম্যানগ্রোভ বনের মধ্য দিয়ে উঁচু বোর্ডওয়াক রয়েছে। ভ্রমণকারীরা শান্ত জলে হেরন, কাঁকড়া এমনকি ফ্লেমিংগো দেখতে পাবেন।

আবুধাবি কর্নিশ
দীর্ঘস্থায়ী প্রিয়, কর্নিশে বালুকাময় জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত সৈকত, পাম-রেখাযুক্ত প্রমোনাড, নিবেদিতপ্রাণ সাইক্লিং পথ ও শহরের আকাশরেখার পরিষ্কার দৃশ্য উপভোগ করা যায় এখান থেকে। তাপ তীব্র হওয়ার আগে এটি একটি আরামদায়ক হাঁটা, বাইক চালানো কিংবা সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনের জন্য উপযুক্ত আরো বেশি নিমজ্জিত অভিজ্ঞতার জন্য, নির্দেশিত কায়াকিং ট্যুর পাওয়া যায়, যা পরিবেশগত সংরক্ষণাগারের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ প্যাডেল প্রদান করে।

উম্মে আল এমারাত পার্ক
এটি বাবুধাবি শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। উম্মে আল এমারাত পার্কটি ছায়াযুক্ত পিকনিক স্পট, একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন, একটি ছোট চিড়িয়াখানা ও সবুজ খোলা জায়গা-সহ একটি দুর্দান্ত পরিবার-বান্ধব জায়গা। এটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের জন্যই উপভোগ্য, বিশেষ করে শীতল সন্ধ্যার সময় সবচেয়ে বেশি আরামদায়ক।

আল জাহিলি দুর্গ
আল জাহিলি দুর্গটি আল আইনে অবস্থিত। উনিশ শতকের এই দুর্গটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক সাথপনার মধ্যে একটি। আশেপাশের বাগান ও প্রদর্শনীগুলো ছায়াযুক্ত পরিবেশে একটি মনোরম সাংস্কৃতিক বিরতি প্রদান করে।

আল আইন মরুদ্যান
আল আইন মরুদ্যান  খুবই উপভোগ্য। এটি জাতিসংখের  ইউনেস্কোর একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। এই মরুদ্যানটি ঐতিহ্যবাহী সেচ ব্যবস্থার  একটি জীবন্ত উদাহরণ। এখানে রয়েছে ১ লক্ষ ৪৭ হাজারের  বেশি খেজুর গাছের আবাসস্থল। ছায়াযুক্ত হাঁটাপথগুলো ঐতিহাসিক ভূদৃশ্যের মধ্যে হাঁটা ও দর্শনীয় স্থান দেখার জন্য একটি শীতল, মনোরম পথ প্রদান করে। ফলে এই মরুদ্যানটি আপনাকে টানতে বাধ্য করবে।

১৮ বছর বয়সী ছাত্রী কেন তার স্বপ্নের স্কুলকে প্রত্যাখ্যান করেছিল?

ডালাস শহরের উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র লানান লা, কলেজের আবেদনপত্র পাঠানো শুরু করার অনেক আগেই তার দৃষ্টি অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থির হয়ে গিয়েছিল।
১৮ বছর বয়সী এই ছাত্রী বলেন, ‘আমি পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে হাই স্কুলে প্রবেশ করেছিলাম যে আমি ইউটি অস্টিনে পড়ব।

সবকিছুই ইউটি ছিল। আমার আলমারি ইউটি-এর পণ্যে ভরা ছিল। আমি ইউটিতে এক সপ্তাহব্যাপী স্পোর্টস মেডিসিন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিলাম, এবং আমি কখনই ভাবিনি যে আমি কোথায় যাব, কারণ এটিই ছিল একমাত্র স্কুল যা আমার মনে ছিল।’

জানুয়ারিতে লা ইউটি-তে তার গ্রহণযোগ্যতা পত্র পেয়ে যায়। কিন্তু আরেকটি কলেজ তার দৃ’ষ্টি আকর্ষণ করে এবং তাকে তার আসন্ন ক্লাসে স্থান দেয়: ডালাস ব্যাপটিস্ট ইউনিভার্সিটি। তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি কিছুটা অবাক করার মতো ছিল।

“আমি আমার মর্যাদাপূর্ণ স্বপ্নের স্কুলটি প্রত্যাখ্যান করে এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আবেদন করেছি যার নাম কেউ শোনেনি,” লা বলেন।

স্থানীয়, প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য কৌতূহলী শিক্ষার্থীরা নিঃসন্দেহে ডালাস ব্যাপটিস্ট ইউনিভার্সিটি। সম্পর্কে শুনেছেন, কিন্তু ২০২৪ সালে স্নাতক ভর্তির সংখ্যা মাত্র ২৮’শ বেশি হওয়ায়, বেসরকারি কলেজটি ইউটি অস্টিনের চেয়ে ছোট, যেখানে ২০২৩ সালের শরৎ সেমিস্টারে ৪২ হাজারের বেশি স্নাতক ভর্তি করা হয়।

টেক্সাসের এই প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্প্রতি জাতীয়ভাবে খ্যাতি অর্জন করেছে: ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ফোর্বস কর্তৃক এটিকে “নিউ আইভি” নামকরণ করা হয়েছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে এটি শিক্ষাগত কঠোরতা এবং স্নাতকোত্তর চাকরির সম্ভাবনার দিক থেকে হার্ভার্ড এবং প্রিন্সটনের মতো আইভি লীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকক্ষ। ইউটি অস্টিনের স্নাতক ব্যবসায়িক প্রোগ্রাম, যা লা আগ্রহী ছিল, ইউএস নিউজ দ্বারা দেশে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে।

যদিও ডিবিইউ-এর এই পার্থক্য নাও থাকতে পারে, এটি একটি দৃঢ় শি’ক্ষা প্রদান করে যা এর স্নাতকদের বেশিরভাগ (৭২%) শুধুমাত্র উচ্চ বিদ্যালয় ডিপ্লোমাধারী তাদের সহকর্মীদের চেয়ে বেশি আয় করতে সাহায্য করে, শিক্ষা বিভাগের কলেজ স্কোরকার্ড অনুসারে। জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুসারে, ১০ বছর পরে ডিবিইউ থেকে বিনিয়োগের উপর রিটার্ন ১ লক্ষ ১৫ হাজার হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

যদিও, ইউটি-তে স্টিকার মূল্য কম। ইউটি অস্টিনের বিজনেস স্কুলে, যেখানে লা পড়াশোনা করতেন, রাজ্যের ভেতরে টিউশন ফি ছিল ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য ১৩ হাজার ৬৭৬ ডলার, যেখানে ডিবিইউতে বছরে ৩৮ হাজার ৩৪০ ডলার খরচ হত।

যাইহোক, কেন তিনি ডিবিইউ বেছে নিলেন…?
‘প্রতিপত্তির’ চেয়ে ‘সংযোগ’ বেছে নেওয়া…….
যখন সে কলেজের কথা ভাবতে শুরু করে, তখন লা জানত যে সে আরও সাশ্রয়ী মূল্যের শিক্ষার জন্য তার নিজের রাজ্য টেক্সাসেই থাকবে। ইউটি তার তালিকার শীর্ষে থাকায়, তার ভ্রমণের জন্য “খুবই উচ্চ প্রত্যাশা” ছি’ল, সে বলে।

“কিন্তু স্বীকার করতেই হবে, আমি এটিকে যেভাবে আশা করেছিলাম সেভাবে পছন্দ করিনি,” সে বলে। “আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি স্কুলের চেয়ে অস্টিনকে একটি শহর হিসেবে বেশি ভালোবাসি।” অক্টোবরে স্কুল থেকে ছুটি থাকাকালীন, সে ডিবিইউ-এর ক্যাম্পাস ঘুরে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়।

“ওই সফরের আগে, আবেদন করার ব্যাপারে আমার একেবারেই কোনো ইচ্ছা ছিল না, এবং আমি তাতে মোটেও আগ্রহী ছিলাম না,” লা বলেন। “কিন্তু ক্যাম্পাসে হেঁটে যাওয়ার সাথে সাথেই আমি সেই বর্ধিত সংযোগ অনুভব করলাম যা আমি ইউটি-তে অনুভব করতে মরিয়া হয়েছিলাম। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার প্রয়োজনীয় সমস্ত বিষয়গুলো পরীক্ষা করে দেখতে শুরু করে।”

লা বুঝতে পেরেছিলেন যে খ্রিস্টান বিশ্বাস-ভিত্তিক অধিভুক্তি এবং ক্যাম্পাস সম্প্রদায় তার সম্ভাব্য কলেজ অভিজ্ঞতার গুরুত্বপূর্ণ দিক। সেই সফরের পরে তিনি অবাক হয়েছিলেন যে কোন স্কুলটি বেছে নেবেন তা নিয়ে তিনি দ্বি*ধা’গ্র’স্ত বোধ করেছিলেন।

“আমি জানতাম যে ইউটি-তে একাডেমিক মর্যাদা কতটা মূল্যবান, কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে সেই ফলপ্রসূ, বিশ্বাস-কেন্দ্রিক সম্প্রদায় থাকাটাই আমার কাছে বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে, এবং ডিবিইউ ঠিক এটাই অফার করে,” তিনি বলেন।

‘আমি আসলেই উন্নতি করতে চেয়েছিলাম’

জানুয়ারীতে, লা উভয় স্কুল থেকেই ভর্তির প্রস্তাব পেয়েছিল এবং জানত যে তাকে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ক্যাম্পাসে থাকাকালীন ডিবিইউ নিজেকে আরও উপযুক্ত বলে মনে করেছিল। এবং বেসরকারি স্কুলটি তাকে অনুদান এবং বৃত্তি প্রদান বন্ধ করে দেয় যার ফলে তার টিউশন খরচ অর্ধেক হয়ে যায় এবং তার মোট উপস্থিতির খরচ ইউটি অস্টিনে তার প্রদত্ত অ’র্থে’র তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়ে যায়, তিনি বলেন। তিনি ফেডারেল আর্থিক সহায়তার জন্য যোগ্য ছিলেন না, তাই বেসরকারি বা অন্যান্য বৃত্তির বাইরে, তিনি স্কুলের জন্য যে অ’র্থ পেতেন তা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরশীল ছিল।যদিও লা প্রথমে মার্কেটিং এবং ব্যবসায় পড়তে চেয়েছিলেন, তারপর থেকে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে তিনি ফিজিওথেরাপিতে বেশি আগ্রহী। তিনি এই বিষয়ে ডক্টরেট করার পরিকল্পনা করছেন এবং জানেন যে স্নাতক ডিগ্রি আরও বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। এর ফলে একটি সাশ্রয়ী মূল্যের স্নাতক ডিগ্রি আরও বেশি অগ্রাধিকার পায়।

শেষ পর্যন্ত, ডিবিইউ লা-এর জন্য আরও যুক্তিসঙ্গত হয়ে ওঠে।

“ইউটি অস্টিনের কাগজে-কলমে নিখুঁত দেখাচ্ছিল, কিন্তু একবার যখন এটি এসে পৌঁছায়, তখন এটি এখন আমার অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না, আমি যা চাইছিলাম তার সাথে এটি অনুরণিত হ’য়’নি,” তিনি বলেন। “আমি কেবল একটি ম’র্যা’দা’পূ’র্ণ নাম জাহির করার জন্য কোনও কলেজে যেতে চাইনি। আমি আসলে উন্নতি করতে চেয়েছিলাম। এবং আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি একটি ব্র্যান্ডের পিছনে ছুটছিলাম, ভবিষ্যতের জন্য নয়।”

কাগজে-কলমে ইউটি অস্টিনকে নিখুঁত দেখাচ্ছিল, কিন্তু একবার যখন এটি এসে পৌঁছালো, তখন এটি এখন আমার বর্তমান অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না, আমি যা চেয়েছিলাম তার সাথে এটি অনুরণিত হয়নি।

তার বাবা-মা তার সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি সমর্থন করেছিলেন, কিন্তু লা স্বীকার করেন যে প্রথমে তিনি তার পছন্দ অন্যদের সাথে ভাগ করে নিতে একটু নার্ভাস ছিলেন।

“আমি এমন একজন যে সত্যিই সেই একাডেমিক মর্যাদা পছন্দ করে, স্মার্ট এবং উচ্চ-প্রাপ্তিকারী হিসেবে পরিচিত, তাই শুরুতে, এই স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দেশের শীর্ষ বিদ্যালয়গুলির মধ্যে একটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলাম তা ব’লা প্রায় লজ্জাজনক ছিল,” সে বলে।

কিন্তু সেই অনুভূতিটি দ্রুতই কেটে যায়। এই মুহুর্তে সে তার সিদ্ধান্তে আত্মবিশ্বাসী, কারণ সে জানে যে সে একটি ভাল স্কুলে যাচ্ছে যেখানে সে তার পছন্দের শিক্ষা এমন একটি জায়গায় দেবে যেখানে সে ঘরে বসে অনুভব করতে পারে।

“আমি বুঝতে পেরেছি যে আমি যদি নিজেকে একজন উচ্চ-প্রাপ্তিকারী ছাত্রী হিসেবে তুলে ধরতে চাই, তাহলে আমি ডিবিউতে তে তা করতে পারব, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম মূলত খুব বেশি অর্থ বহন করে না,” সে বলে।

প্রাক্তনকে ভুলে থাকার ৭ টি উপায়

হাজার বছর একসাথে থেকেও কাছের মানুষটাকে চেনা যায় না আবার দুই দিনেও অনেনকে চিনে ফেলা যায়। কিন্তু কাছের মানুষ যে কখন কাচের মানুষ হয়ে যাবে তা কেউই-ই নিশ্চিত করে বলতে পারে না। তাছাড়া সম্পর্ক হয় বলেই তো সম্পর্ক ভাঙ্গে। আর এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু এই ভাঙ্গা-গড়ার খেলার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়। ভুলতে হয় অতীতকে, ভুলতে হয় প্রাক্তনকে। তবে মুখে বললেই তো আর হয় না। চেষ্টা করলে হয়তো অনেকটাই ভুলে থাকা যায়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ভুলে থাকবেন প্রাক্তনকেঃ

১। প্রিয় মানুষটির সাথে বিচ্ছেদ হয়েই গেছে, তাই এখন প্রথম কাজ হচ্ছে তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করা। আসলে যোগাযোগ রেখে কাউকে কখনও ভোলা যায় না। বর্তমান সময়ে অনেকেই বলেন- বিচ্ছেদের পরে তারা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখছেন। কিন্তু এটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষতিকর হয়। কারণ প্রিয় মানুষটাকে বারবার দেখলে বা তার সাথে কথা বললে সেই পুরোনো স্মৃতিগুলোই বারবার মনে করিয়ে দেয়। ফলে কষ্ট না কমে বরং বাড়তেই থাকে।

২। মানুষ কাজের অবস্থায় থাকলে অনেক কিছুই ভুলে থাকতে পারে। কিন্তু যখন হাতে কোনো কাজ না থাকে তখন জীবনের সকল স্মৃতি চোখের সামনে ভাসতে থাকে। তাছাড়া ব্যর্থতার স্মৃতিগুলোই সবচেয়ে বেশি তাড়িয়ে বেড়ায়। তাই নিজেকে যতটা ব্যস্ত রাখবেন প্রাক্তনকে ভুলে থাকা আপনার জন্য ততটা সহজ হবে।

৩। বিচ্ছেদ হলেই মানুষ একাকিত্বকে আপন করে নেয়। কিন্তু এই অভ্যাসটাকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া উচিত না। কারো সাথে বিচ্ছেদ হলে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের মানুষের সাথে সময় দেবেন। সম্ভব হলে দূরে কোথায় ঘুরে আসবেন। মনে রাখবেন স্মৃতি ভোলার অন্যতম ঔষধ হলো স্থান পরিবর্তন।
৪। যার সাথে বিচ্ছেদ হয়েছে তার দেওয়া উপহারগুলো চোখের সামনে থেকে দূরে রাখুন। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডি থেকে দূরে থাকবেন। বারবার তার দেওয়া বা আপনার পাঠানো ম্যাসেজ চেক করবেন না। তার আইডি আনফলো করে রাখুন ও ইনবক্সের সকল ম্যাসেজ ডিলেট অথবা আর্কাইভে পাঠিয়ে দিন। তবে এক্ষেত্রে তাকে ব্লক করে দেওয়া হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম কাজ।

৫। প্রাক্তনের উপর রাগ বা জেদ পুষে রাখবেন না। পারলে তাকে ক্ষমা করে দিন। ক্ষমা করে দিলে আপনার আত্মায় প্রশান্তি কাজ করবে আর তার প্রতি তেমন ক্ষোভ কাজ করবে না। মনে রাখবেন কারো প্রতি যত রাগ বা ক্ষোভ পুষে রাখবেন তাকে তত বেশি মনে পড়বে।

৬। বন্ধু-বান্ধব বা অন্য কাউকে দিয়ে প্রাক্তনের উপর নজরদারি করবেন না। অথবা তার সম্পর্কে অতিরিক্ত খোঁজ-খবর নেবেন না। কারো সম্পর্কে যত খোঁজ নেবেন তার প্রতি তত ভালোবাসা অথবা ঘৃণা জন্মাবে। কিন্তু মনে রাখবেন প্রাক্তনের উপর ঘৃণা অথবা ভালোবাসা দুটোই আপনার জন্য ক্ষতিকর।

৭। কারো সঙ্গে বিচ্ছেদ হলেই তার প্রতি নেতিবাচক ধারণা করবেন না। মনে রাখবেন বিচ্ছেদ শুধু বিপরীত মানুষটার কারণেই হয় না। এখানে নিজের দোষও থাকতে পারে। তাই বিচ্ছেদের জন্য যারই বেশি ভূমিকা থাকুক না কেন সেটাকে অতীত ভেবে নতুন কিছু নিয়ে চিন্তা করুন।

লেখকঃ রেদোয়ান মাসুদ

আপনি কি পর্যাপ্ত পরিমাণে রোদ ও ভিটামিন ডি পাচ্ছেন?

ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের জন্য খুবই দরকারি একটি উপাদান। এক ভিটামিন ডি আমরা কোথা থেকে পাব? আপনি কি জানেন আপনার ত্বক যখন সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসে তখন আপনার শরীর ভিটামিন ডি তৈরি হয়? হয়তো জানেন, অথবা না। তবে সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি পাওয়া সত্ত্বেও, ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশ মানুষের ভিটামিন ডি-এর অভাব থেকে যায়।

এর কারণ হলো আপনার ত্বকের ভিটামিন ডি তৈরি না হওয়ার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে ঋতু, মেঘের উপস্থিতি, দিনের সময়, বায়ু দূষণ, বয়স, রং ও আপনি যথাযথ সানস্ক্রিন ব্যবহার করছেন কিনা।

আবার খাবারে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি প্রাকৃতিকভাবে উপস্থিত না থাকা। ফলে আমাদের পরিপূরক গ্রহণ করতে হয়।

ভিটামিন ডি শরীরের জন্য কেন দরকার?

হাড়ের স্বাস্থ্যে ভিটামিন ডি’র একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এর অভাব হাড়ের ভর কমায়, অস্টিওপোরোসিস, শক্ত হয়ে যাওয়া ও পেশীতে ব্যথা হয়।

ভিটামিন-ডি ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরামত ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এই কারণেই শরীরে ২০০টি ভিন্ন ধরণের কোষ রয়েছে যাদের ভিটামিন ডি-এর রিসেপ্টর রয়েছে।

অবশেষে, গবেষণায় দেখা গেছে যে ভিটামিন ডি হতাশা, ওজন বৃদ্ধি, স্তন ক্যা*ন্সা’র, প্রোস্টেট ক্যা*ন্সা’র, কোলন ক্যা*ন্সা’র, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও অটোইমিউন রোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। আর এই কারণেই আপনাকে পর্যাপ্ত ভিটামিন-ডি পেতে আগ্রহী করে তুলবে!

আপনার ভিটামিন ডি-এর মাত্রা পরীক্ষা করুন

রোদে গেলে আপনি ভিটামিনটি যথেষ্ট পরিমাণে পাচ্ছেন কিনা তা জানার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ডাক্তারকে একটি সাধারণ রক্ত ​​পরীক্ষা করতে বলা। আপনার ভিটামিন ডি-এর রক্তের স্তরের উপর নির্ভর করে, আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সম্পূরক গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন।

আরও রোদ নিন 

গরমকালে আপনি সহজেই সূর্য থেকে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার আইইউ ভিটামিন-ডি পেতে পারেন। এরজন্য আপনার হাতের তালু ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য সূর্যের আলোতে উন্মুক্ত রাখতে হবে।

আপনার পুরো শরীরকে সূর্যের আলোতে উন্মুক্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই। এটা নিশ্চিত করুন যে আপনিও রোদে পোড়া না হন। আসলে, হাতের তালু ছাড়া মুখ ও ত্বকের বাকি অংশ ঢেকে রাখা উচিত। তবে হাতের তালুতে সানস্ক্রিন কিংবা সানব্লক ব্যবহার করবেন না। কারণ এটি ভিটামিন ডি সংশ্লেষণকে বাধাগ্রস্থ করবে।

তবে আপনি একটি ভিটামিন-ডি ল্যাম্প কিনতে পারেন। ল্যাম্পটি উচ্চ-তীব্রতার অতিবেগুনী-বি রশ্মি তৈরি করে যা ত্বকে ভিটামিন ডি সংশ্লেষণকে ট্রিগার করে। এটি বিশেষ করে বয়স্ক লোকদের জন্য সহায়ক যারা বাইরে কম সময় কাটান ও পর্যাপ্ত রোদ পান না।

ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে 

আপনি যদি চর্বিযুক্ত মাছ ও মাছের তেল খেতে পছন্দ করেন তাহলে খাবার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি নাও পেতে পারেন। সৌভাগ্যক্রমে, বাজারে পাওয়া অনেক দুগ্ধজাত পণ্য ও সিরিয়াল ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ। মাশরুম ও ডিমেও এই দরকারি ভিটামিনের পরিমাণ কম থাকে।

পরিপূরক গ্রহণ করুন

আপনি যদি এই খাবারগুলো আকর্ষণীয় মনে না করেন বা আপনার অ্যালার্জি থাকে ও আপনি জানেন যে আপনি পর্যাপ্ত রোদ পাচ্ছেন, তাহলে ঘাটতি এড়াতে পরিপূরক গ্রহণের কথা বিবেচনা করুন। এটি বিশেষ করে পোস্টমেনোপজাল মহিলাদের, দীর্ঘমেয়াদী স্টেরয়েড গ্রহণকারী লোকদের, বয়স্কদের, সেইসাথে গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য প্রযোজ্য।

তবে হঠাৎ করে সাপ্লিমেন্ট খাওয়া শুরু করবেন না। সবার আগে আপনি ভিটামিন ডি-এর মাত্রা পরীক্ষাকরুন।  তারপর সঠিক সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন।

দেহের প্রয়োজনে মানুষ প্রেমে পড়ে যা একসময় মনেরও প্রয়োজন সাধন করে

বারবার মানুষ প্রেমে পড়ে। এমনকি জীবনের শেষ বয়সে এসেও মানুষ প্রেমে পড়তে পারে। বারবার প্রেমে পড়ার পিছনে আমাদের আদিসত্তা সাহায্য করে। একই ঘটনার নতুনত্ব নিয়ে আসে এই আদিসত্তা এবং আমাদের মনে কামনা অনুযায়ী সব কিছু উপস্থাপন করে থাকে। যেমন আপনার যদি ক্ষুধা লাগে তাহলে সপ্নে আপনি খাবারের ছবি দেখবেন এটাই স্বাভাবিক। এই খাবারের ছবিগুলো আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন ঘটায় এই ইদ বা আদিসত্তা। কেননা আপনার সত্তাকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব এই আদিসত্তার।

প্রথমত আমরা দেহের প্রয়োজনে আমরা প্রেমে পড়ি এবং এটা একসময় মনেরও প্রয়োজন সাধন করে।

এখন কোনটা দৈহিক আর কোনটা মনের প্রেম সেটা অনেক সময় পার্থক্য করতে পারিনা, আদস(ego) বা আদিসত্তা আমাদের সেটা আবিষ্কার করতে দেয়না। আদসের কাজটা হল আপনাকে আপনার কামনা পূরনের পরিবেশ সৃষ্টি করা যাতে আপনি টিকে থাকেন।

একই বিছানায় শুয়ে আছেন দুজন। কিন্তু আপনাদের কেবল আদিসত্তার কামবাসনা পূরনের জন্যই। অন্যকোনো যে সত্তা আছে তা আপনারা দেখতেই পান না। আদিম চাহিদার জন্য একত্রে মিলিত হন আবার খুব দ্রত নিজেকে আলাদা মানুষ ভেবে আলাদা হয়ে যান, তাইতো?

শুধু সামজিক চাপে নিজের স্ট্যাটাস বজায় আর আদি সত্তার চাহিদা পূরনের জন্য যদি আপনি আপনার পায়ের গতি বৃদ্ধি করেন তাহলে ভাববেন আপনি ভুল করছেন। পায়ের গতিটা থামান একবার ভাবুন। যদি আপনি আদিসত্তার দ্বারা চলতে থাকেন তাহলে আপনি মানুষ নয় পশু হয়ে যাবেন।

তবে আমাদের আদিসত্তাটার প্রয়োজন কিন্তু ব্যাপকতা না হলে আমাদের আচরন কিন্তু রুক্ষ হয়ে যাবে।তাই বার বার প্রেমে পড়াটা খুব স্বাভাবিক। আপনি তাই করছেন যাতে আপনি টিকে থাকতে পারেন। আর যাদের আদসটা উঁচু তারা তো প্রেমের ধারে কাছে আসতে পারে না। প্রেমের চেয়ে এদের মানসম্মানটা বেশী প্রিয়। নিজের মানসম্মান রক্ষার জন্য এমন মানুষ কখনো একটা মেয়ের হাত ধরার চিন্তাও করতে পারে না।
তাই আসুন নিজের সত্তা অনুযায়ী আমরা কাজ করি।

উজ্জল হোসেন
বি, এস-সি (অনার্স), এম, এস-সি, মনোবিজ্ঞান বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

জীবন সুন্দর অপূর্ণতায় – রুহুল আমিন

শখ পূরনের একটা বয়স থাকে। একটা নির্দিষ্ট বয়সে, কোনো নির্দিষ্ট জিনিসের উপর যে আকর্ষণ থাকে, পরিণত বয়সে সেই জিনিসের উপর আগ্রহ একই রকম থাকেনা। আগ্রহ বদলে যায়। সেসব বস্তুর স্থান নেয় অন্য কিছু। কিন্তু অপূর্ণ শখের যে আফসোস, সেটা মস্তিষ্কে স্থান নেয় পাকাপাকিভাবে।

শৈশবে আমার শখ ছিল দুইটা, বল আর বন্দুক। মাঝে অল্প কিছু সময়ের জন্য গুলতি। কিন্তু টার্গেট প্র্যাকটিসের জন্য বাসার রসুন, আশেপাশের পতিত কঙ্কর, ইটের টুকরার পূর্ণ সদ্ব্যবহার (!) করায় আমার গুলতির বেদনাদায়ক নির্বাসন ঘটে। বন্দুকের ব্যবহার কিভাবে থেমেছিল মনে পড়ছে না। তবে বল কেনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল যখন এলাকায় ক্রিকেট খেলার জন্য, চাঁদা তুলে বল আর ব্যাট কেনা শুরু করেছিলাম আমরা তখন।

কয়েকদিন আগে আমি একটা বুকশপে টিনটিনের বক্স সেট দেখলাম। পকেটে টাকা ছিল,ভাবলাম – কিনে ফেলি। ভাবতেই আমার মন এক টানে প্রায় ১০ বছর পিছনে চলে গেল। তখনো বগুড়ায় এরকম বড়লোকের বুকশপ হয়নি। টিনটিনের তখন একটা সাদাকালো আর ধূসর – তিনরঙ্গা সেট পাওয়া যেত। কোচিং এ ফেরার পর কোন এক শুক্রবার, ঈদ সালামীতে পাওয়া টাকা নিয়ে আমি গিয়েছিলাম সেই সেট কিনতে। দাম জিজ্ঞেস করার পর, টাকার যে অঙ্কটা শুনলাম – তাতে বুঝলাম শখের খাতায় আরেকটা শখ বিয়োগ করতে হবে।

লাইফ অফ পাই মুভিতে ইরফান খান যখন – In the end, the whole of life becomes an act of letting go বলার সময়, ছোট্ট একটা পজ দিয়েছিলেন, আমি বুঝেছিলাম তার ঐ ছোট্ট বিরতিতে তিনি আমার তাবৎ অপূর্ণ শখকে আটকে ফেলেছেন। আমার টিনটিনের বক্স সেট, তাড়াহুড়া করে বদ্ধ গাড়িতে পড়া কমিক, এখনো কোনো বইয়ের গায়ের দাম দেখে তাকে আবার সযত্নে তাকে রেখে আসা – সবকিছুকে ভদ্রলোক এক বিন্দু নীরবতায় প্রকাশ করেছিলেন।

লেখকঃ
রুহুল আমিন
সাইবার সিকিউরিটি এবং নেটওয়ার্ক এডমিনিস্ট্রেশন
ইউনিভার্সিটি আফ খোভদে
সুইডেন

Exit mobile version