মেয়েটি খুব ভালো রান্না পারে। দেখতেও অনেক সুন্দরী। বাবা চরম বিপদে পড়ে যায়। লেখাপড়া বন্ধ হয়। অতপর একটি হোটেলে কাজ নেয়- ভর্তাবাড়ি। কিন্তু সেই রান্নার সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
একদিন এক বড়লোক এসে তার রান্না খেয়ে থ হয়ে যায়। বাসায় গিয়ে বউকে গালি দেয়। কাজের মেয়েদেরও গালি দেয়। এরপর সে নিয়মিত ঐ হোটেলে এসে খায়। আস্তে আস্তে তাদের প্রেম হয়। বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে যায়। আগের স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেয়। সাথে কাজের মেয়েদেরও। কিন্তু বিয়ের পরে স্বামীর বাড়িতে তার রান্না ভালো হয় না। ফলে শুরু হয় দ্বন্দ। মেয়েটি গর্ভবর্তী হয়। চাপ দেওয়া হয় এবোরশনের। কিন্তু সে রাজী হয় না। অতপর সিদ্ধান্ত নেয় মেয়েটিকে মেরে ফেলবে। মেয়েটিকে মেরে সে নদীর মাঝে ফেলে যায়। আর বলে বেড়ায় মেয়েটি অন্য কারো সাথে পালিয়েছে। মেয়েটি বেঁচে যায় বেঁচে যায় বাচ্চাটিও। এরপর সে আগের বউকে আবার ঘরে তুলে সাথে আগের কাজের মেয়েদেরও।
অনেক বছর পর একদিন সে অন্য এক হোটেলের (হোটেল আল সালাদিয়া) কাছে যায় ক্ষুধা লাগে। ভাত খায়। কিন্তু সেই আগের মতোই স্বাদ। ছেলেটি অবাক হয়ে রান্না ঘরে যায়। গিয়ে দেখে সেই মেয়েটি একটি বাচ্চা কোলে নিয়ে রান্না করছে। আবারও তার এই রান্না খাওয়ার শখ জাগল। মেয়েটিকে আবারও নিতে চাইল কিন্তু সে রাজী হলো না। বাচ্চাটি এত সুন্দর কর মা ডাকছিল যে ছেলেটির আর প্রাণে সয় না। তারও মন চাইলো ওর বাবা ডাক শুনতে। কিন্তু সে বাবা ডাকে না। এখন কি উপায়। অবশেষে সে এই হোটেলের জায়গা কিনে নেওয়ার চিন্তা করল। কিনেও নেয়। (বাচ্চাটির নামে হোটেলটি কেনা হয়) মেয়েটি নিয়মিত ভাড়া দেয়। তবে কার নামে হোটেল তা গোপন থাকে। ছেলেটি অনেক চেষ্টা করে কিন্তু মেয়েটি রাজী হয় না। এক সময় ছেলেটি পাগল হয়ে যায়। ভবগুড়ে। নগ্ন সরীরেই ঘোরে। অনেক বছর পরে ।
বুড়ো বয়সে। রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য সরকার জমি অধিগ্রহণ করবে। তাই হোটেলটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। এখন হোটেল চালায় তার ছেলে। তবে মাঝে মাঝেই এক পাগল এসে ভাত খেয়ে যায়। ছেলেটির মা অসুস্থ তাই সে আর হোটেলে আসে না। সরকার জমি অধিগহন করবে তাই হোটেলটি ভেঙ্গে ফেলা হলো। তবে সেই পাগল এসে বাঁধা দেয়। কারণ সে প্রায়ই এখানে এসে ভাত খায়। বাচ্চাটি হোটেল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। কিন্তু সেই পাগল এসে বাঁধা দেয় এই জায়গায় নতুন রাস্তা করতে। বিষয়টা সে তার মায়ের কাছেও জানায়। কিন্তু হঠাত এদিকদিন ভুমি অফিস থেকে লোক এসে জানায় এই জমির মালিক এমুক।
ফলে বাচ্চাটি সরকার থেকে অনেক টাকা পায়। টাকা পেলেও পাগল্টি নিয়মিত এসে সেখানে বসে থাকে। অতপর একদিন ছেলেটির মা নতুন রাস্তা দেখতে আসে। রেল লাইন। এসে দেখে সেই পাগলটি মারা গেছে। কয়েক টুকরো লাশ একসাথে করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। কাপড় দিয়ে নিচের অংশ ঢেকে রাখা হলেও উপরের অংশে কোনো কাপড় ছিল না। এ সময় মেয়েটি দেখতে পায় তার হাতে একটি দাগ।
যেটি মূলত রান্না ঘরে রান্না দেখতে গিয়ে হাত পুড়ে হয়েছিল। এসময় পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যেতে চায় কিন্তু মেয়েটি বাঁধ দেয় এবং বলে তার স্বামীর লাশ। বুড়ির কথা শুনে তার ছেলে অবাক হয়। তবে এ যে তার বাপ সেটা সে বিশ্বাস করে। কারণ তার বাবাই তো তার নামে এই জমি কিনে রেখে গিয়েছিল। অতপর ছেলেটির অনেক ইচ্ছা হয় বাবার ডাক শুনতে ও তারও মন চায় বাবা ডাক দিতে। কিন্তু তা আর হয় না। বাবা ছেলে লাশের পাশে বসে কাঁদছে আর চোখের জ্বলে ভাসছে।