বৃষ্টি এমন এক জিনিস যখনই টপ টপ করে পড়তে থাকে মানুষের হৃদয়ের মাঝে কেমন যেন করে ওঠে। তাছাড়া বৃষ্টির দিনে মানুষের মনে নতুন কোনো অনুভূতি জাগ্রত হয়। কাছের মানুষ কিংবা দূরের যেই হোক না কেন তার ছবিখানা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। হতে পারে ভালোবাসা কিংবা বিরহ। বিরহও তো ভালোবাসারই একটা অংশ। আর প্রকৃত ভালোবাসা বিরহের মধ্যেই বিদ্যমান।

এই বৃষ্টি নিয়ে কবি সাহিত্যিকরা লিখে গেছেন না কবিতা ও ছন্দ। বৃষ্টির সাথে ভালোবাসার গভীর সম্পর্ক আছে। এটা চিরন্তন সত্য। সুখের হোক কিংবা দুঃখের, বৃষ্টি রোমান্টিক সম্পর্কের প্রতিটি মুহূর্তকে আরও তীব্র করে তোলে। সঙ্গীত জগতে অনেক গানের কলি বর্ষাকাল থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আসে, প্রেম থেকে হৃদয় ভাঙার গভীরতা ধারণ করে।

বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা আলতো করে আপনার শরীরে আদর করার অনুভূতি হলো এক বিশুদ্ধ জাদু। যেন আকাশ থেকে নেমে আসা স্বর্গের ছোয়া। বৃষ্টির ফোঁটার একটি অনন্য অভিজ্ঞতা রয়েছে। বৃষ্টির ফোঁটা কানে ফিসফিস করে, প্রেমে পড়ার সাহস জোগায়। অন্যদিকে মিষ্টি গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হৃদয়কে ভালোবাসা ও রোমান্সে জাগায়।

বর্ষাকাল হলো বছরের সবচেয়ে রোমান্টিক সময়গুলোর একটি। তবে যে সব সময় সুখের হয় তা কিন্তু নয়,দুঃখজনকও হতে পারে। বৃষ্টি উপভোগ করার প্রত্যেকের নিজস্ব উপায় আছে। শিশুরা বৃষ্টির মধ্যে খেলতে পছন্দ করে, অন্যদিকে তরুণরা প্রায়শই বৃষ্টিতে রোমান্স খুঁজে পায়, আনন্দ ও হৃদয়ে ব্যথা; উভয়ই অনুভব করে থাকে। বয়স্ক লোকেরা চায়ের কাপে চুমুক দেয়ার সময় বৃষ্টি উপভোগ করে, প্রিয়জনদের সাথে কাটানো দারুণ স্মৃতিগুলো স্মরণ করে। প্রতিটি মানুষের বৃষ্টি উপভোগ করার এক অনন্য স্বাদ রয়েছে।

যখন মানুষের মনে ভালোবাসা পূর্ণভাবে ফুটে ওঠে তখন মনে হয় যেন বর্ষাকাল আনন্দ ও উত্তেজনা নিয়ে আসে। বৃষ্টি আসার পাগ মুহূর্তে আবহাওয়া যেন প্রেমের সূচনার ইঙ্গিত দেয়। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা মাটিতে পড়ার সাথে সাথে তারা একটি প্রিয় সুরের সাথে নাচতে থাকে। আকাশ থেকে পড়ে মাটি স্পর্শ করা বৃষ্টির ফোঁটাগুলো সবচেয়ে সূক্ষ্ম সুগন্ধির মতো একটি সুবাস নির্গত করে। বৃষ্টি পড়া শেষ হলে একটি রংধনু আবির্ভূত হয়, যা এমন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তৈরি করে তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।

যখন একতরফা প্রেম অপ্রতিদানযোগ্য অনুভূতির বেদনার সঙ্গে একাকার হয়ে যায়, তখন বর্ষাকাল গভীর তাৎপর্য ধারণ করে। বৃষ্টির আগে জমে থাকা কালো মেঘগুলো মন ও হৃদয়কে আ’ঘা’তকারী স্মৃতির বন্যার মতো। এই মুহূর্তে হৃদয় সেই স্মৃতির বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে।

মানুষ বৃষ্টিকে উপভোগ করার জন্য গা এলিয়ে দেয়। কেউ-বা হাত পেতে বৃষ্টির স্পর্শ নেয়। কিন্তু সেই বৃষ্টির স্পর্শ তখন হৃদয়ের মাঝে ঝড় তুলে যায়। হয়তো তখন কাউকে খুব করে পেতে ইচ্ছে করে। কারো সাথে ভিজতেও ইচ্ছে করে। হয়তো সবার ভাগ্যে সব কিছু হয় না। তারপরেও মানুষ চায় বৃষ্টির মধ্যে কারো হাতে হাত রেখে একটু হাঁটতে। স্পর্শে বুকের মাঝে শীতলতা অনুভব করতে।

কিন্তু সত্যি বলতে এটা খুব সুন্দর মনে হয়। আকাশ থেকে ঝরে পড়া এক ফোঁটা জল এই বিশাল পৃথিবীর আয়না হতে চাইছে।

এটা আবহাওয়াকে ঠান্ডা করে তোলে ও আমাদের হৃদয়কে উষ্ণতায় ভরে দেয়। মানুষ বৃষ্টির ফোঁটায় মুখ ভরে রাখতে ভালোবাসে।

গাছ, ফুল, পাখি ইত্যাদিকে খুবই খুশি দেখায়। এর এক স্পর্শেই সবকিছু সুন্দর হয়ে ওঠে। ঠান্ডা বাতাস মানুষের মুখ স্পর্শ করে। বাতাস নারীদের চুল জট পাকিয়ে দেয় এবং ঠান্ডা জল সবকিছু ঝরে পড়ে অনুভব করায় যে সে বেঁচে আছে। এটা মানুষকে মনে করিয়ে দেয় যে জিনিসগুলো কতটা সুন্দর ও ভালো হতে পারে।

বৃষ্টি, কালো মেঘ মানুষের হৃদয়ের তৃষ্ণা নিবারণ করে। শুধু সাময়িকভাবে এটি মানুষের ভেতরে থাকা শূন্যতা পূরণ করে। এটি মানুষের সমস্ত দুঃখ, অপূর্ণতা, অশ্রু ধুয়ে দেয়, অবিশ্বাস করে, নতুন উৎসাহ ও প্রেরণায় পূর্ণ করে। বৃষ্টিতে কখনও ধনী-দরিদ্র, মানুষ-প্রাণী, জীবিত-নির্জীবদের মধ্যে বৈষম্য করে না। বৃষ্টি সবার মনেই অনুভূতি জাগায়। বৃষ্টি নিয়ে ক্যাপশন

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *